fbpx

১৫টি মোটিভেশনাল বই যেগুলো আপনার অবশ্যই পড়া উচিত

জীবন – কত রহস্য, কত চ্যালেঞ্জ, কত আশা, কত হতাশার মিশেল! কখনো সফলতার আনন্দে মন ভরে ওঠে, কখনো আবার হতাশার কালো মেঘে ঢেকে যায় সব।

অথচ আমরা সবাই প্রবলভাবে সম্ভাবনাময়। কিন্তু যথাযথ তথ্য, জ্ঞান, পরিশ্রম এবং উৎসাহের অভাবে আমাদের অবস্থার কোনো উন্নতি হয় না। আমরা বিষাদময়, হতাশাপূর্ণ, ব্যর্থ জীবনযাপন করে চলি।

আজকের লেখায় থাকছে বিশ্বজুড়ে সমাদৃত, মিলিয়ন মিলিয়ন কপি বিক্রিত, মানসম্মত এবং কার্যকরী ১৫টি মোটিভেশনাল বই নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা, যা আপনাকে

  • নতুনভাবে অনুপ্রেরণা যোগাবে,
  • আপনার লক্ষ্য অর্জনে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হতে সাহায্য করবে,
  • সফলতার দিকে এগিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করবে।

তাহলে আর দেরী কেন?

এখনই জেনে নিন মোটিভেশনাল বইগুলো সম্পর্কে। আজই এই বইগুলো সংগ্রহ করুন এবং আপনার জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনুন!

১৫টি মোটিভেশনাল বই যেগুলো আপনার অবশ্যই পড়া উচিত

১. Rich Dad Poor Dad / রিচ ড্যাড পুওর ড্যাড

পুরো বিশ্বের সাধারণ মানুষের কাছে টাকার খেলাকে খোলাসা করেছিল রবার্ট টি. কিওসাকি’র লেখা বেস্টসেলার এই বই। রবার্ট বইটিতে তার দু‘জন বাবার কাছ থেকে শেখা শিক্ষা নিয়ে আলোচনা করেছেন। একজন তার নিজের বাবা, আরেকজন তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুর বাবা। রবার্ট টাকা-পয়সা সম্পর্কিত বিভিন্ন ঘোরপ্যাঁচ শিখেছিলেন তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুর বাবার কাছ থেকে। তার নিজের বাবা ছিলেন একজন সাধারণ সরকারি চাকুরিজীবি অন্যদিকে বন্ধুর বাবা ছিলেন ধনাঢ্য ব্যবসায়ী। বইটি থেকে সংকলিত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট :

  • গরীব আর মধ্যবিত্তরা টাকার জন্য কাজ করে। আর বড়লোকরা টাকাকে নিজেদের কাজে লাগায়।
  • কত টাকা উপার্জন করছেন সেটা মুখ্য নয়। কত টাকা নিজের কাছে রাখতে পারছেন সেটাই মূখ্য।
  • বড়লোকরা সম্পদ কেনে বা অর্জন করে। গরীব আর মধ্যবিত্তরা এমন জিনিস কেনে, যা আসলে তাদের জন্য বোঝা/দেনা হয়ে দাঁড়ায় কিন্তু তারা সেগুলোকে সম্পদ ভেবে ভুল করে।
  • টাকা উপার্জন করার পর সেটাকে আপনি কীভাবে ব্যবহার করেন, কীভাবে রক্ষা করেন এবং কীভাবে নিজের কাজে লাগান; এগুলোই আপনার অর্থনৈতিক যোগ্যতা।
  • আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ- আমাদের মন।

“Money often makes obvious our tragic human flaws, putting a spotlight on what we don’t know.”

মোটিভেশনাল বই - রিচ ড্যাড পুওর ড্যাড - Rich Dad Poor Dad

বইটি সংগ্রহ করতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন

২. Atomic Habits / এটমিক হ্যাবিটস

যথেষ্ট মেধাবী ও পরিশ্রমী হওয়া সত্ত্বেও আমরা জীবনে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছুতে পারি না। সব দোষ ভাগ্যের ওপর চাপিয়ে দিয়ে নিজেকে সান্ত্বনা দিই। অথচ আমাদের এই ব্যর্থতার পেছনে অন্যতম কারণ হলো বদঅভ্যাস কিংবা সুঅভ্যাসের অনুপস্থিতি। লেখক জেমস ক্লিয়ার এই বইয়ের প্রতিটি পৃষ্ঠায় আমাদের অভ্যাসের গঠন ও পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা করেছেন। বইটি থেকে সংকলিত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট :

  • ছোট ছোট সুঅভ্যাসের চর্চা মনোবল বাড়ানোর পাশাপাশি চক্রবৃদ্ধি হারে আমাদের জীবনমানের উন্নতি ঘটায়।
  • নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের দিকে মনোযোগ না দিয়ে হ্যাবিট সিস্টেম বা অভ্যাস পদ্ধতির দিকে বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত।
  • লক্ষ্য নয়, অভ্যাস বদলান।
  • অভ্যাস বদলানোর ৪টি উপায় রয়েছে :
    1. নতুন অভ্যাসকে সহজ করে তোলা,
    2. অভ্যাস বদলানোকে আকর্ষণীয় করে তোলা,
    3. অভ্যাস বদলানোর জন্য সুবিধানজনক পরিবেশ তৈরি করা,
    4. নিজেকে পুরস্কৃত করা।
  • আপনি চাইলেও বদঅভ্যাস থেকে বের হতে পারছেন না কারণ অভ্যাস বদলানোর জন্য আপনি ভুল পদ্ধতিতে এগোচ্ছেন।
  • মানুষের অভ্যাস গড়ে ওঠার পেছনে পরিবেশের অদৃশ্য হাত রয়েছে।

“Your identity emerges out of your habits. Every action is a vote for the type of person you wish to become.”

Atomic Habits - এটমিক হ্যাবিটস

বইটি সংগ্রহ করতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন

৩. Miracle Morning / মিরাকল মর্নিং

সকালে দেরিতে ঘুম থেকে ওঠায় পুরো দিনই মাটি হয়েছে- এরকম অনুভূতি কম-বেশি আমাদের সবারই আছে। সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠলে সময়ের সর্বোচ্চ ব্যবহার করা সম্ভব। লেখক হ্যার এরলড বিভিন্ন যুক্তি ও দর্শন উপস্থাপনের মাধ্যমে পাঠকদের মনে সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠার গুরুত্ব প্রবেশ করাতে চেয়েছেন। বইটি থেকে সংকলিত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট :

  • প্রতিদিন সকালে আপনি কীভাবে ঘুম থেকে ওঠেন এবং সকালে আপনার রুটিন কী; এই দুটো বিষয় আপনার জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রের সফলতার ওপর প্রভাব ফেলে থাকে।
  • শুধুমাত্র সকালে ওঠার ধরনে পরিবর্তন এনে আপনি নিজের জীবনের যেকোনো ক্ষেত্রে এত দ্রুত পরিবর্তন আনতে পারবেন, যা হয়তো আপনি কখনো ভেবেও দেখেননি।
  • কমপক্ষে ৩০ দিন টানা সকালে ওঠার চর্চা করুন। সহজ জিনিস বেছে নেবেন না, সঠিক জিনিসটি বেছে নিন।
  • আপনার আজকের অবস্থান আপনার অতীতের কাজের ফল। ঠিক তেমনি ভবিষ্যতে আপনি কোন অবস্থানে থাকবেন তার পুরোটাই নির্ভর করছে আপনি এই মুহূর্ত থেকে কী করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তার ওপর।
  • অ্যালার্ম থামানোর জন্য বাটন চেপে আবার ঘুমিয়ে গিয়ে মূলত আপনি নিজের সম্ভাবনাময় দিনটিতে বাধা সৃষ্টি করছেন, আপনি নিজেই আপনার জীবনের উন্নতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছেন।

“Your entire life changes the day that you decide you will no longer accept mediocrity for yourself.”

The Miracle Morning - দ্য মিরাকল মর্নিং

বইটি সংগ্রহ করতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন

৪. The Power of Habit / দ্য পাওয়ার অব হ্যাবিট

”চার্লস ডুহিগ রচিত ইন্টারন্যাশনাল বেস্টসেলার এই বইটিতে অভ্যাসের পেছনে থাকা বিজ্ঞান নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। যারা নিজেদের বদঅভ্যাস বদলে সুঅভ্যাস ধারণ করতে চান তাদের জন্য বইটি অত্যন্ত কার্যকর হতে পারে। বইটি থেকে সংকলিত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট :

  • অভ্যাস মূলত একধরনের চক্র। সংকেত, কাজ ও পুরস্কার; এই চক্রে মোট ৩টি উপাদান রয়েছে। অভ্যাস বদলাতে হলে সবার আগে সংকেত নিয়ে কাজ করতে হবে। কোন সংকেত আমাদের কোন কাজ করতে ঠেলে দিচ্ছে বা উৎসাহিত করছে তা বুঝতে হবে।
  • এক অভ্যাসের সাথে অন্যান্য অভ্যাস সংযুক্ত। একটি কুঅভ্যাসের সাথে আরো ১০টি কুঅভ্যাস জড়িত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই মূল কুঅভ্যাসটি চিহ্নিত করে কুঅভ্যাসের শেকল বা চেইনকে নষ্ট করা প্রয়োজন।
  • ‘গোল্ডেন রুল অব হ্যাবিট চেঞ্জ’, যেখানে বলা হয়- আসলে কোনো অভ্যাসকে মুছে ফেলা যায় না বা ধ্বংস করা যায় না। অভ্যাসকে স্রেফ রুপান্তর করা যায়। অভ্যাস বদলাতে হলে সংকেত আর পুরস্কারকে আগের মতোই রেখে মাঝে থাকা কাজটিকে পরিবর্তন করতে হবে। এভাবে বাস্তবসম্মত উপায়ে অভ্যাস বদলানো সম্ভব।

“Champions don’t do extraordinary things. They do ordinary things, but they do them without thinking, too fast for the other team to react. They follow the habits they’ve learned.”

The power of habit - দ্য পাওয়ার অব হ্যাবিট

বইটি সংগ্রহ করতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন

৫. Zero to One / জিরো টু ওয়ান

আজকাল সবাই উদ্যোক্তা কিংবা উদ্যোক্তা হতে চায়। কিন্তু উদ্যোক্তা হওয়া কি এতটাই সহজ? হ্যাঁ, উদ্যোক্তা হওয়া হয়তো সহজ। কিন্তু সফল উদ্যোক্তা হওয়া এত সহজ নয়। সফল উদ্যোক্তা হতে গেলে সৃজনশীলতা প্রয়োজন। যে সেক্টরে ব্যবসায় করবেন, সেই সেক্টর নিয়ে অগাধ জ্ঞান থাকা আবশ্যক। পিটার থিয়েল রচিত এই বইটি আপনাকে সেই জ্ঞানের দিশা পাইয়ে দেবে। বইটি থেকে সংকলিত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট :

  • উদ্যোক্তা হওয়া মানে কিন্তু কাউকে দেখে কপি বা অনুকরণ করা করা নয়। বরং ইউনিক কিংবা নতুন কোনো আইডিয়ার মাধ্যমে কোনো সমস্যার সমাধান করা বা সার্ভিস দেওয়াই একজন উদ্যোক্তার প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত।
  • লেখক পিটার থিয়েল প্রতিযোগিতা বিরোধী। তথাকথিত হেলদি কম্পিটিশনে তিনি বিশ্বাস করেন না। তাই তিনি উদ্যোক্তাদেরকে মনোপলি তথা একচেটিয়া ব্যবসা করতে উৎসাহ দিয়েছেন। এমন ব্যবসা/আইডিয়া/পণ্য/সার্ভিস নিয়ে এগোতে বলেছেন যেখানে একচেটিয়াভাবে ব্যবসা করা সম্ভব।
  • চোখে সামনে রয়েছে কিন্তু কারো চোখে পড়ছে না- সফল উদ্যোক্তা হতে এমন সিক্রেট বা গোপন জিনিসের খোঁজা করা প্রয়োজন। এর সাথে প্রযুক্তির ছোঁয়া যোগ করার মাধ্যমে খুবই কার্যকরী ব্যবসা দাঁড় করানো সম্ভব।
  • অল্পসময়ে বেশি মুনাফা অর্জনের চেয়ে মজবুত বুনিয়াদ তৈরি করে দীর্ঘমেয়াদী লাভজনক ব্যবসা এবং ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠা করা বুদ্ধিমানের কাজ।

“Monopoly is the condition of every successful business.”

Zero to One জিরো টু ওয়ান

বইটি সংগ্রহ করতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন

৬. The Power of Positive Thinking / দ্য পাওয়ার অব পজেটিভ থিংকিং

আমেরিকান লেখক নরম্যান ভিনসেন্ট পিল তাঁর ‘দ্য পাওয়ার অব পজেটিভ থিংকিং’ বইটিতে মানুষের জীবনে মনের প্রভাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। অনেকেই ‘মনের জোর’ বিষয়টিকে হালকাভাবে নিয়ে থাকেন। কিন্তু বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের জ্ঞানী-গুণীরা বারংবার ইতিবাচক চিন্তার মাধ্যমে মনের শক্তি বৃদ্ধি করার পরামর্শ দিয়েছেন। বইটি থেকে সংকলিত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট :

  • মানুষের ভেতরে থাকা ইতিবাচক মানসিকতা মানুষের বাহ্যিক কাজের মাধ্যমে ফুটে ওঠে। পজেটিভ চিন্তা-ভাবনা অনুশীলন করলে মানুষের পক্ষে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সফল হওয়া সহজ হয়ে যায়।
  • আত্মবিশ্বাস ও নিশ্চিতবোধ খুবই জরুরি বিষয়। মানুষ যখন নিজের কোনো সক্ষমতা বা দক্ষতার ব্যাপারে নিশ্চয়তাবোধ করে তখন তার আত্মবিশ্বাসও বেড়ে যায়। পজেটিভ আত্মবিশ্বাস চমৎকার সব সুযোগ এবং ফল নিয়ে আসে।
  • ভয় আর দুশ্চিন্তা মোকাবিলা করার কোনো বিকল্প নেই। এধরনের নেতিবাচক চিন্তা মানুষের উন্নতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এর বদলে প্রয়োজন বিশ্বাস, প্রার্থনা এবং ইতিবাচক মানসিকতা।
  • বিশ্বাসের শক্তি অপরিসীম। লেখক ভিনসেন্ট পিল দাবি করেছেন বিশ্বাস মানুষের মানসিক ও শারীরিক জখম সারিয়ে তুলতে সহায়তা করে।
  • নিজের সফলতার ছবি কল্পনা করতে শেখা প্রয়োজন। এধরনের চর্চা মানুষের মনে পজেটিভ প্রভাব ফেলে। মানুষ সচেতন বা অবচেতন মনে বিভিন্ন সুযোগ দেখতে পায় এবং চমৎকার ফলাফল অর্জন করতে পারে।

“Our happiness depends on the habit of mind we cultivate.”

The power of positive thinking

বইটি সংগ্রহ করতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন

৭. The 7 Habits of Highly Effective People / দ্য সেভেন হ্যাবিটস অব হাইলি ইফেক্টিভ পিপল

সফলতার সাথে অভ্যাস ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই সফল হতে চাইলে সফল ব্যক্তিদের অভ্যাস সম্পর্কে জেনে সেগুলো আত্মস্থ করার চেষ্টা করলে সফল হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। লেখক স্টিভেন কোভে এই বইটিতে সেরকম ৭টি অভ্যাসের ওপর আলোকপাত করেছেন। বইটি থেকে সংকলিত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট :

  • সফল হতে হলে সবার আগে সক্রিয় হওয়া প্রয়োজন। একজন সক্রিয় ব্যক্তি এমন বিষয়ের দিকে মনোযোগ দেন যেখানে তিনি প্রভাব বিস্তার করতে পারবেন, নিজে কিছু যোগ করতে পারবেন। সক্রিয় ব্যক্তি কখনো কোনো কিছু ঘটার অপেক্ষায় নিজের হাত গুটিয়ে বসে থাকেন না।
  • কাজ শুরু করার আগে কর্মফলের ব্যাপারে স্পষ্ট ধারণা রাখা। কার্যকরী তথা সফল ব্যক্তিদের মাঝে এই অভ্যাসটি দেখা যায়। তারা কোনো কাজ শুরু করার আগেই কাজটি শেষ করার পর পরিস্থিতি কেমন দাঁড়াতে পারে সেব্যাপারে ওয়াকিবহাল থাকেন।
  • টাইম ম্যানেজমেন্ট এবং কাজের গুরুত্ব বুঝে সেই অনুযায়ী কাজগুলো সম্পাদন করা। কাজের গুরুত্ব কম কিন্তু এই মুহূর্তেই করতে হবে- এমন কাজের চেয়ে যে কাজ করলে ভবিষ্যতে লম্বা-সময় উপকৃত হওয়া যাবে, সেই কাজকে গুরুত্ব দেওয়া আবশ্যক।
  • দু’পক্ষেরই লাভ হয় এমন কিছু ভাবা বা প্রস্তাবনা করা। ব্যক্তিগত জীবন বা পেশাদার জীবনে সফল ব্যক্তিদের মাঝে এই অভ্যাসটি লক্ষ্য করা যায়। এভাবে তারা ভাল নেটওয়ার্ক গড়ে তোলেন, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং প্রত্যকেই লাভবান হোন।
  • আগে বোঝা তারপর নিজের বক্তব্য বোঝানো। লেখক স্টিভেন কোভে জোর দিয়ে দাবি করেছেন সফল হতে হলে এই অভ্যাসটি আত্মস্থ করা প্রয়োজন। এতে সম্পর্ক মজবুত হয় এবং খুবই কার্যকরীভাবে বার্তা আদান-প্রদান করা যায়।

“Most people do not listen with the intent to understand; they listen with the intent to reply.”

The 7 Habits of Highly Effective People- দ্য সেভেন হ্যাবিটস অব হাইলি ইফেক্টিভ পিপল-জীবন গঠনে সাত অভ্যাস

বইটি সংগ্রহ করতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন

৮. Just Shut Up and Do it / জাস্ট শাট আপ অ্যান্ড ডু ইট

খ্যাতনামা মোটিভেশনাল লেখক ব্রায়ান ট্রেসি’র লেখা ছোট্ট এই বইটি হয়তো আপনার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। বইটির পাতায় পাতায়, ছোট ছোট অধ্যায় জুড়ে, অল্প কথায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং কার্যকরী সব পরামর্শ রয়েছে। বইটি থেকে সংকলিত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট :

  • আপনার পরিচয় শুধুই আপনি। আজ আপনি যে অবস্থানে আছেন, এজন্য আপনার অতীতের সিদ্ধান্ত এবং কর্মকান্ডগুলো দায়ী। আপনি অতীত বদলাতে পারবেন না, কিন্তু ভবিষ্যৎ বদলাতে পারবেন।
  • আপনি যা করেন কিংবা করতে ব্যর্থ হোন, তার ৯৫% নির্ভর করে আপনার অভ্যাসের ওপর। আপনার অভ্যাসগত ধারণা ও আচরণগত ধারণার ওপর আপনার কর্মকান্ড নির্ভর করে। অভ্যাসগত ধারণা হলো- আপনি জীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে নিজেকে যেভাবে পরিচালিত করেন। আর আচরণত অভ্যাস হলো- আপনি যা করতে অভ্যস্ত কিংবা অভ্যস্ত নন।
  • সিদ্ধান্তহীনতা অনেক বড়ধরনের বাজে প্রভাব ফেলে। অধিকাংশ মানুষ লো লেভেলে বা নিচু অবস্থানে থাকে কারণ তারা কখনো হায়ার লেভেলে বা উঁচু স্তরে কাজ করার সিদ্ধান্তই নেয় না।
  • সুখের অনুভূতি অনুভব করা জরুরি। জীবনে যখন আপনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি (সাধারণত অন্য কেউ করার আগে) যথাসময়ে শুরু ও শেষ করেন তখন আপনি জিতে যান। ফলে নিজেকে নিয়ে আপনার চমৎকার অনুভূতি হয়। আপনার ব্রেইন এনডোফিন নামক হরমোন ছড়িয়ে দেয়। এনডোফিন হলো সুখের প্রাকৃতিক ড্রাগ। এই হরমোন আপনাকে সুখ ও শান্তির অনুভূতি দেয়। তখন আপনি নিজেকে বিজয়ী ভাবেন।
  • লোকে আপনার ব্যাপারে কী ভাববে, কী বলবে এই ভয়ে কোনো কাজ থেকে পিছু হটবেন না বা কোনো কাজ করবেনও না। কারণ সত্যি বলতে, আপনার ব্যাপারে কেউ-ই ভাবছে না।

“Decide today to accept 100 percent responsibility for everything you are or ever will be.”

Just shut up and do it - জাস্ট শাট আপ অ্যান্ড ডু ইট

বইটি সংগ্রহ করতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন

৯. The 48 Laws of Power / দ্য ফোরটি এইট লয়জ অব পাওয়ার

রবার্ট গ্রিন রচিত এই বইটি বেশ বিতর্কিত। বইটিতে এমন কিছু মানসিক কৌশল খুল্লাম-খুল্লাভাবে শেখানো হয়েছে যা খারাপ মানুষের হাতে পড়লে সমাজের ক্ষতি হতে পারে! তবে বইটি থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা ইতিবাচক কাজে ব্যবহার করলে এক ব্যক্তি নিশ্চিতভাবে উপকৃত হবে। বইটি থেকে সংকলিত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট :

  • কখনো নিজের প্রকৃত উদ্দেশ্য সবার সামনে প্রকাশ করবেন না। নিজের ব্যাপারে সবার কাছে অস্পষ্ট, অনিশ্চিত ধরনের চিত্র তুলে ধরুন। এতে পরিস্থিতির ওপর আপনার সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণ থাকবে এবং সময়মতো আপনি নিজের কৌশল সাজিয়ে সবাইকে চমকে দিতে পারবেন।
  • নিজের অস্তিত্ব জানান দিন। সবার মাঝে অদৃশ্য হয়ে থাকার মাঝে কোনো লাভ নেই। যেখানেই থাকুন না কেন মানুষের দৃষ্টিআকর্ষণ করুন, অ্যাটেনশন নিয়ে নিন। এতে আপনার প্রভাব বাড়বে এবং আপনি একধরনের ক্ষমতা অর্জন করতে সক্ষম হবেন।
  • নিজের মতো করে ভাবুন কিন্তু অন্যদের মতো করে আচরণ করুন। অর্থাৎ সমাজে প্রচলিত রীতিনীতি অনুসরণ করুন তবে নিজে চিন্তাভাবনা করার সময় স্বাধীনভাবে মুক্তচিন্তা করুন। সমাজের রীতির বিরুদ্ধে গিয়ে আপনি অহেতুক ঝামেলায় জড়িয়ে পড়বেন। কিন্তু সমাজের সাথে তাল মিলিয়ে চলে, নিজের মুক্তচিন্তা ধরে রাখলে আপনি সমাজ থেকে প্রচুর ফায়দা নিতে পারবেন।
  • শত্রুকে নিঃশেষ করে নিন। ক্ষমা করলে বা ছাড় দিলে একজন শত্রু পরবর্তীতে শক্তি সঞ্চয় করে বা লোকবল বৃদ্ধি করে আপনার ক্ষতি করে বসতে পারে। তাই শত্রুর এমন অবস্থা করুন যেন সে আর কখনোই আপনার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে না পারে।

“Always try to hide your talent in the presence of your superiors. If you try to show you’re smarter, your master will feel insecure.”

বইটি সংগ্রহ করতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন

১০. Meditations / মেডিটেশনস

রোমান সম্রাট মারকাস অরেলিয়াস রচিত এই বইটি আসলে ছিল অনেকটা ব্যক্তিগত ডায়েরির মতো। যেখানে তিনি বিভিন্ন জ্ঞানী ব্যক্তিদের কাছ থেকে পাওয়া শিক্ষা এবং নিজের অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান লিপিবদ্ধ করেছিলেন। প্রায় ২০০০ পুরোনো এই বইটিতে লিপিবদ্ধ জ্ঞান ও পরামর্শসমূহ আজও বিস্ময়করভাবে প্রাসঙ্গিক। বইটি থেকে সংকলিত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট :

  • যা নিজের নিয়ন্ত্রণে নেই তা নিয়ে অহেতুক মাথা না ঘামানো। লেখক এধরনের বিষয় নিয়ে ক্ষীপ্ত বা হতাশ হতে নিরুৎসাহিত করেছেন। বাহিরের পরিস্থিতি যা-ই হোক না কেন, মনকে প্রশান্ত রাখা জরুরি।
  • জীবন ক্ষণস্থায়ী চরিত্রের অধিকারী। আনন্দ হোক বা দুঃখ, এই মুহূর্তে যা হচ্ছে যা মন থেকে গ্রহণ করতে শেখা প্রয়োজন। কোনোকিছুই স্থায়ী নয়, সময় বদলে যাবে। বস্তুগত বিষয়াদির প্রতি আসক্তি ত্যাগ করা আবশ্যক।
  • কিছু জিনিস আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি (যেমন : আমাদের চিন্তা, আচরণ ও কর্ম) আর কিছু জিনিসের আমাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না (যেমন : বাহ্যিক ঘটনা, অন্যের মতামত)। আমাদের শক্তি ও সময় সীমিত। তাই যে জিনিসগুলো আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি, আমাদের যাবতীয় মনোযোগ ও শক্তি সেইসব জিনিসে প্রয়োগ করা উচিত।
  • বর্তমানে বাঁচা প্রয়োজন। অতীত নিয়ে পড়ে থাকা কিংবা ভবিষ্যতের স্বপ্নে বিভোর থাকা বোকামি। বর্তমানের প্রতি মনোযোগ দিয়ে, সমসাময়িক বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শান্ত ও যৌক্তিক মন ব্যবহার করলে জীবন পথ চলা সহজ হয়ে যায়।
  • মানবতার গুরুত্ব অপরিসীম। মানুষের প্রতি সহমর্মিতা থাকা, তাদেরকে বোঝার চেষ্টা করা, সাহায্য করা ইত্যাদির চর্চা প্রয়োজন। মানুষের সাথে মেশা প্রয়োজন, এতে অন্যদের দৃষ্টিভঙ্গি, সংগ্রাম, দুঃখ বোঝা যায় এবং এভাবে মনে মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটে।

“The happiness of your life depends upon the quality of your thoughts.”

বইটি সংগ্রহ করতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন

১১. The Art of Happiness / দি আর্ট অব হ্যাপিনেস

জীবনে আমরা যা-ই করি না কেন হয়তো শেষ লক্ষ্য থাকে সুখী হওয়া। কিন্তু সেই সুখের দেখা কি আমরা পাই? কীভাবে সুখ নামের সোনার হরিণটিকে আমাদের পক্ষে ধরা সম্ভব? দালাই লামা এবং ড. হাওয়ার্ড কাটলার ‘দ্য আর্ট অব হ্যাপিনেস’ বইতে একটি অর্থপূর্ণ, সুখী জীবন অর্জন করার বিভিন্ন উপায় নিয়ে আলোচনা করেছেন। বইটি থেকে সংকলিত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট :

  • সুখ মূলত অনুভব করার বিষয়। দালাই লামা জোর দিয়ে দাবি করেছেন, বাহিক্য জিনিস দিয়ে নয় বরং অন্তর থেকে সুখের অনুভূতি জাগ্রত হয়ে থাকে। সুখী হওয়ার জন্য সহানুভূতি, দয়া এবং পজেটিভ চিন্তাভাবনা থাকা জরুরি।
  • পরার্থপরতা বা অপরের মঙ্গলের জন্য কাজ করার মাধ্যমে সহজেই সুখী হওয়া সম্ভব। আমরা যতই চেষ্টা করি হয়তো কখনোই নিজেদের চাহিদা পূরণ করতে পারব না কিন্তু আমরা চাইলে খুব সহজেই অপর একজন মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে নিজেকে সুখী করতে পারি।
  • ইতিবাচক মনোভাব রাখা, কৃতজ্ঞতা স্বীকার করা প্রয়োজন। কঠিন চ্যালেঞ্জগুলোকে ভয় না পেয়ে বরং নিজের বড় হওয়ার জন্য ভাল সুযোগ হিসেবে বিবেচনা করা উত্তম।
  • রাগ, ঘৃণা আর ঈর্ষা; এই তিনটি জিনিস সুখ নষ্ট করে। তাই এগুলো থেকে দূরে থাকা আবশ্যক।

“A disciplined mind leads to happiness, and an undisciplined mind leads to suffering.”

The art of happiness - দ্য আর্ট অব হ্যাপিনেস

বইটি সংগ্রহ করতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন

১২. Start With Why / স্টার্ট উইথ হোয়াই

উদ্যোক্তাদের জন্য ‘স্টার্ট উইথ হোয়াই’ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বই। কোনো ব্যবসা শুরু করার আগে বা কোম্পানি চালু করার আগে কিছু বিষয়ে একদম স্পষ্ট ধারণা থাকা প্রয়োজন। লেখক সাইমন সিনেক এই বইতে সেসব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। বইটি থেকে সংকলিত দুটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট :

  • কেন, কীভাবে এবং কী; মোট তিনটি স্তর নিয়ে গোল্ডেন সার্কেল গঠিত। লেখক দাবি করেছেন কোনো সফল ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান শুরুটা করে ‘কেন’ দিয়ে, এই কেন-এর মাঝে থাকে তার মূল উদ্দেশ্য বা বিশ্বাস, যেটা তাকে উৎসাহিত করে। এরপর পর আসে ‘কীভাবে’, এই পর্যায়ে সে/তারা কাজটি সম্পাদন করার পদ্ধতি ঠিক করে যা তাদেরকে অন্যদের চেয়ে আলাদা করে দেয়। এবং সবশেষে আসে ‘কী’ অর্থাৎ, তাদের উৎপাদিত পণ্য বা সেবার বাস্তব ফলাফল কী।
  • কোনো প্রতিষ্ঠানের ‘কেন’ জানাটা খুবই জরুরি। শুধু মুনাফা করার জন্য বা টাকা উপার্জন উপযুক্ত কারণ হতে পারে। এর বাইরেও গুরুত্বপূর্ণ কিছু থাকা জরুরি। কোম্পানি কী করে এটার চেয়ে কেন করে, মানুষের কাছে এটা বেশি গুরুত্ব রাখে। এই ‘কেন’-এর উত্তর স্পষ্ট হলে একটি কোম্পানি তার নিজের কর্মী এবং গ্রাহকদের সাথে গভীরভাবে সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে। এতে লয়্যালিটি এবং কমিটমেন্ট দৃঢ় হয়।

“People don’t buy WHAT you do, they buy WHY you do it.”

Start with why

বইটি সংগ্রহ করতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন

১৩. How to Win Friends & Influence People / হাউ টু উইন ফ্রেন্ডস অ্যান্ড ইনফ্লুয়েন্স পিপল

ডেল কার্নেগি রচিত ক্লাসিক এই বইটি জগদ্বিখ্যাত। বইটিতে তিনি আলোচনা করেছেন কীভাবে আমরা কার্যকরী উপায়ে সমাজের বিভিন্ন স্তরে থাকা মানুষের সাথে ইতিবাচক সম্পর্ক তৈরি করে একটি চমৎকার জীবন গড়ে তুলতে পারি। আমাদের ব্যক্তিগত এবং পেশাগত জীবনকে সহজ করতে বইটি অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা রাখতে সক্ষম। বইটি থেকে সংকলিত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট :

  • অন্য মানুষের প্রতি প্রকৃত অর্থেই আগ্রহ দেখানো জরুরি। তাদের কথা শোনা, প্রয়োজনে প্রশ্ন করে বিস্তারিত জেনে নেওয়া, তাদের দৃষ্টিভঙ্গি, দর্শন, মতামত ইত্যাদির প্রতি আগ্রহ দেখানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এভাবে খুব সহজেই মানুষের সাথে চমৎকার একটি আন্তরিকতা সম্পর্ক গড়ে তোলা যায়।
  • মন থেকে এবং সততার সাথে মানুষের প্রশংসা করা উচিত। এতে বন্ধুত্ব করতে সুবিধা হয়।
  • মানুষের সমালোচনা এবং নিন্দা করা থেকে বিরত থাকা মঙ্গল। কারণ এতে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হতে সমস্যা হয়, এমনকি ভাল সম্পর্কও নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশংকা থাকে। লেখক এক্ষেত্রে ব্যক্তির নিন্দা না করে বরং সমস্যার সমাধান বের করার দিকে মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
  • জোর-জবরদস্তি করে নয় বরং নিজের চিন্তা-ভাবনা দিয়ে প্রভাবিত করে মানুষের মন জয় করা প্রয়োজন। নিজের এবং অপর মানুষটির মাঝে মিল কোথায় সেটা খুঁজে নিয়ে আলোচনা ও প্রস্তাব রাখলে সফল হওয়া সহজ হয়ে যায়।

“Success in dealing with people depends on a sympathetic grasp of the other person’s viewpoint.”

How to win friends

বইটি সংগ্রহ করতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন

১৪. Think and Grow Rich / থিঙ্ক অ্যান্ড গ্রো রিচ

নেপোলিয়ন হিল রচিত ক্লাসিক বইটি বিশ্বের অসংখ্য মানুষকে সফলতা এবং সম্পদ অর্জনের পথ বাতলে দিয়েছে। বইটি থেকে সংকলিত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট :

  • ভাবনার শক্তি অনেক। তাই নিজের চিন্তা-ভাবনার প্রতি যত্নশীল হওয়া প্রয়োজন। আমাদের চিন্তাই ধীরে ধীরে আমাদের বাস্তবতাকে গড়ে দেয়। সফল হতে হলে আত্মবিশ্বাসী হওয়া, ইতিবাচক মানসিকতা লালন, সফলতাকে কল্পনা করা এবং নিজের সক্ষমতার ওপর বিশ্বাস রাখা অত্যন্ত জরুরি।
  • ‘ডেফিনিট চিফ এইম’ তথা সুনির্দিষ্টভাবে বড় একটি লক্ষ্য থাকা বাঞ্চনীয়। জীবনে আপনি প্রকৃত অর্থে কী অর্জন করতে চান সেটা স্পষ্টভাবে জানা আবশ্যক।
  • একা না থেকে গ্রুপে যোগদান করা মঙ্গল। একই লক্ষ্য বা ভাবধারার ব্যক্তিদের সাথে ওঠাবসা করার মাধ্যমে জ্ঞানের আদান-প্রদান ঘটে। যার সফলতার পথকে সহজ করে দেয়।
  • নেপোলিয়ন হিল দাবি করেন, অর্জন করার মতো লক্ষ্য থাকার পরেও অধিকাংশ মানুষ মূলত অধ্যবসায়ের অভাবেই ব্যর্থ হয়। সফলতার স্বাদ পেতে হলে লেগে থাকতে হবে।
  • সাবকনসাস মাইন্ড এবং অটোসাজেশন। একজন ব্যক্তি প্রতিনিয়ত তার চিন্তা-ভাবনাকে ইতিবাচক পথে পরিচালিত করে তখন একটি পর্যায়ে তার অজান্তেই তার অবচেতন মন তাকে আরো ভাল ভাল সাজেশন দিতে থাকে, যে সাজেশনগুলো তাকে সফলতার দিকে আরো কয়েকধাপ এগিয়ে দেয়।

“The starting point of all achievement is desire”

Think and grow rich - থিংক এন্ড গ্রো রিচ

বইটি সংগ্রহ করতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন

১৫. The Magic of Thinking Big / দ্য ম্যাজিক অব থিংকিং বিগ

ডেভিড জে. শোয়ার্টজ তার এই বইটিতে ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে সফলতা পাওয়ার ব্যাপারে বিভিন্ন ধরনের কার্যকরী পদ্ধতি আলোচনা করেছেন। বইটি থেকে সংকলিত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট :

  • আপনার অজান্তেই আপনার ভাবনাগুলো আপনার কাজে প্রভাব ফেলে। তাই নিজেকে সফল ব্যক্তি হিসেবে দাঁড় করাতে চাইলে সৃজনশীল মনোভাবের সাথে নিজের চিন্তা-ভাবনার পরিচর্চা করা জরুরি।
  • এভারেজ বা গড়পড়তা নয় বরং নিজেকে বা নিজের কাজকে আরো উন্নত পর্যায়ে নেওয়ার লক্ষ্য থাকা উচিত। বড় লক্ষ্য নির্ধারণ করলে আমরা আমাদের সক্ষমতার সীমাকে পরীক্ষা করতে পারব। এভাবে এগোলে আমরা সফলতা অর্জন করতে পারব যা হয়তো আমরা শুরুতে ভাবতেও পারতাম না।
  • অজুহাত দেওয়া বন্ধ করা আবশ্যক। আমরা কোনো কাজে ব্যর্থ হলে নিজেকে ছাড়া অন্য সবকিছুকে দোষারোপ করতে পছন্দ করি। এতে আমাদের ব্যক্তিত্বের কোনো উন্নতি হয় না। অজুহাত দেওয়া বন্ধ করে নিজ উদ্যোগে সমস্যার সমাধান করা প্রয়োজন।
  • পরাজয়কে ব্যর্থতার সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করতে হবে। কোনো কাজে ব্যর্থ হওয়া মানেই সেই ব্যর্থতা স্থায়ী নয়। পজেটিভ মাইন্ডসেট নিয়ে, ভুল থেকে শিখে সামনে এগিয়ে যেতে হবে এবং লেগে থাকতে হবে।

“The point is clear. People who get things done in this world don’t wait for the spirit to move them; they move the spirit.”

The Magic of Thinking Big / দ্য ম্যাজিক অব থিংকিং বিগ

বইটি সংগ্রহ করতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন

মোটিভেশনাল বই নিয়ে শেষ কথা

আশা করছি আমাদের দেয়া মোটিভেশনাল বইয়ের তালিকাটি আপনার ভালো লেগেছে। এখানে কোনটি আপনি আগে পড়েছেন, কোনটি পড়বেন চিন্তা করছেন আমাদের সাথে শেয়ার করুন। আপনার জানা অন্য কোন বই যা আপনাকে মোটিভেশন দিয়েছে, সেগুলো নিয়েও কমেন্ট করতে পারেন। তাহলে সবার উপকার হবে।

Author

মুরাদ খান (Murad Khan) এর ছোটবেলা থেকেই প্রযুক্তির প্রতি আলাদা আগ্রহ আছে। প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে মানুষের জীবনে ভালো পরিবর্তন আনার জন্য কাজ করতে ভালোবাসেন। । কর্মজীবন শুরু করেন ফ্রিল্যান্সিং দিয়ে, পরে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে যোগ দেন। নিজের চেষ্টায় অর্জন করেছেন ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিভিন্ন দক্ষতা। কাজ করছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ প্রযুক্তি নিয়ে আগ্রহী মানুষের জীবন মান উন্নয়নে। এই লক্ষ্যেই বিডি আইসিটি ক্লাবের প্রতিষ্ঠা।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!