fbpx

আত্মবিশ্বাস কী? আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর ৮টি নিশ্চিত উপায়

”যখন আপনি বিশ্বাস করবেন যে, আপনি কোন কিছুতেই ব্যর্থ হবেন না, তখন আপনি সবচেয়ে বড় কোন স্বপ্নটি দেখবেন?” – এটি আত্মবিশ্বাস নিয়ে করা সেরা একটি প্রশ্ন যা ব্রায়ান ট্রেসি তার বইতে উল্লেখ করেছেন। নিজেকে করে দেখুন বার বার। ফলাফল দেখে অবাক হয়ে যাবেন।

সফল মানুষরা এভাবেই নিজেদের প্রশ্ন করে আর বড় বড় স্বপ্ন দেখে। আপনিও যদি আত্মবিশ্বাসী হয়ে সফল হতে চান তবে আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন।

আত্মবিশ্বাস কী? আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর ৮টি নিশ্চিত উপায়

আত্মবিশ্বাস কি?

আত্মবিশ্বাস হচ্ছে একজন মানুষের দক্ষতা ও ক্ষমতা সম্পর্কে তার মনোভাব।। এটি হচ্ছে নিজের যোগ্যতার উপর আস্থা, যার কারণে আপনি নিশ্চিন্তে অনেক অসাধ্য সাধন করতে এগিয়ে যান। এর অর্থ আপনি আপনার শক্তি ও দূর্বলতা সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখেন।

আত্মবিশ্বাস সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন

এই অংশে আমরা আত্মবিশ্বাস সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি জিজ্ঞেস করা কিছু প্রশ্নের উত্তর দেখবো।

আত্মমর্যাদা ও আত্মবিশ্বাসের মধ্যে সম্পর্ক কি?

আত্মমর্যাদা হচ্ছে নিজের সম্মানবোধকে রক্ষা করা। নিজের ব্যক্তিত্ব ও চরিত্রকে উঁচুস্থানে রাখাই আত্মমর্যাদা। আত্মবিশ্বাস বলতে বুঝায় কোনো কাজ করার জন্য নিজের থেকেই ভরসা ও উৎসাহ পাওয়া।

আত্মমর্যাদা ও আত্মবিশ্বাসের দুটো গুণই মানুষকে নিজের যোগ্যতা সম্পর্কে সচেতন করে। কেউ যদি নিজের প্রতি সম্মানবোধটা অটুট ও উঁচু স্থানে রাখতে চায় এর মুলে রয়েছে নিজের যোগ্যতা সম্পর্কে আস্থা ও বিশ্বাস। সেই অর্থে আমরা বলতে পারি আত্মবিশ্বাস থেকেই আত্মমর্যাদার শুরু।

আত্মবিশ্বাস কেন প্রয়োজন?

আত্মবিশ্বাস এর ইংরেজি শব্দ – self-confidence ও একটি জনপ্রিয় শব্দ। আত্মবিশ্বাস জীবনে ভীষণভাবে প্রয়োজন। একটু খেয়াল করে দেখুন – আপনি কোন একটা লক্ষ্য অর্জন করতে চান, কিন্তু আপনি আসলেইে এই লক্ষ্য অর্জন করতে পারবেন কিনা তা নিয়ে দুঃচিন্তা করছেন আর কাজে পিছিয়ে যাচ্ছেন !!! এখানেই আত্মবিশ্বাসের গুরুত্ব!

সম্পূর্ণ যোগ্যতা থাকলেও আপনি আগাতে পারছেন না! ভাবতেও পারছেন না যে আপনাকে দিয়ে সম্ভব এই কাজ!

তাই বলা যায়-

-> আত্মবিশ্বাস কঠিন কাজ সহজ করে দেয়

-> আত্মবিশ্বাসের কারণে মানুষ তার স্বপ্নপূরণ করতে পারে সহজেই

-> নিজের পরিচয় তৈরী করতে সাহায্য করে

-> ভয় ও দুশ্চিন্তা দূর করে

-> নিজের ভেতরের সুপ্ত সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলে

আত্মবিশ্বাসী মানুষের বৈশিষ্ট্য কি

আত্মবিশ্বাসী মানুষের বৈশিষ্ট্য কি?

  • নির্ভয়ে কথা বলা ও বক্তব্য উপস্থাপন করা
  • সিদ্ধান্ত নিতে পারদর্শী
  • কাজের প্রতি ভালোবাসা
  • সবসময় শিখতে আগ্রহী এবং দক্ষতার সাথে কাজ করতে আগ্রহী
  • অন্যকে উৎসাহ দিতে পারদর্শী

আত্মবিশ্বাস না থাকার লক্ষণসমূহ কি?

আত্মবিশ্বাস না থাকলে একজন মানুষের আচরণে কিছু বিষয় প্রকাশ পায়। সেগুলো হলো –

  • নিজেকে অযোগ্য মনে করা।
  • নিজের গুণ বা যোগ্যতা সম্পর্কে সন্দিহান থাকার কারণে যেকোনো কাজ করতে গেলেই ভয় পায় তারা।
  • যেহেতু এই মানুষগুলি ধরেই নেয় যে তাদের ভেতরে যোগ্যতার কমতি আছে তাই ভবিষ্যৎ লক্ষ্য নির্ধারণ নিয়েও তাদের আকাঙ্খা থাকে না তেমন।
  • কোনো কাজ করতে গেলে সফলতা বা ব্যর্থতা আসবেই। কিন্তু যার মাঝে আত্মবিশ্বাসের অভাব রয়েছে তাকে দেখা যায় সমস্ত ব্যর্থতার জন্য নিজেকে দায়ী করতে।
  • যেকোনো কাজে আকাঙ্খিত সফলতা না আসলে পুনরায় সেখান থেকে শিক্ষা নেয়ার পরিবর্তে তারা ভেবে নেয় যে তাদের ভাগ্য খারাপ!

আত্মবিশ্বাস না থাকার কারণ কি?

একজন মানুষের মাঝে আত্মবিশ্বাস না থাকার বেশ কিছু কারণ রয়েছে। এর মাঝে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য কারণগুলো হচ্ছে:-

  • লক্ষ্য স্থির করে গবেষণা না করা
  • স্বপ্ন না দেখার অভ্যাস
  • সফলতার গল্প না শোনা
  • লক্ষ্য স্থির করতে ভয় পাওয়া
  • নিজের শক্তি ও যোগ্যতা নিয়ে পরীক্ষা না করা
  • খুব বেশি তুলনা করা অন্যের সাথে
  • বিভিন্ন ধরণের মানুষের সাথে মেলামেশা না করা
  • অন্যের নেতিবাচক মন্তব্যকে গুরুত্ব দেয়া
  • নতুন যেকোনো কাজকে অনেক কঠিন মনে করা
  • আত্মশক্তিকে গুরুত্ব না দেয়া

অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস থাকলে কি ক্ষতি?

অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো না। অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসও তাই! আসুন দেখি অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস আমাদের জন্য কিভাবে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়:

  • অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের জন্য যদি মনে হয়, কোনো কাজের জন্য যথেষ্ট প্রস্তুতির দরকার নেই তখনি ভুল ভ্রান্তির সুযোগ তৈরী হয়।
  • অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের কারণে মানুষ নিজের কাজকে পূণরায় বিচার করতে ভুলে যায়। ফলে পরবর্তীতে কাজে সমস্যা দেখা দেয়।
  • যখন মনে হয় যে আমার খুব বেশি মনোযোগের প্রয়োজন নেই কারণ আমি জানি আমি পারবোই, তখন মানুষের মধ্যে অহংকারের জন্ম নেয় যা পতনের কারণ হয়ে দাড়ায়।
  • পরামর্শ না নেয়ার প্রবণতা তৈরি হয়
  • অপরের অতিরিক্ত সমালোচনা করার প্রবণতা তৈরি হয়

আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলার নিশ্চিত উপায়

আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলার কিছু কার্যকরী উপায় এখানে বর্ণনা করা হলো যা বরেণ্য লেখকদের বিভিন্ন বই ও মোটিভেশনাল উক্তির আলোকে লেখা হয়েছে। অতএব এই উপায়গুলি আপনার জন্য নিশ্চিতভাবেই উপকারী হবে।

১. আপনি কিসে ভালো সেটা জানুন:

প্রথমেই আপনাকে জানতে হবে আপনি কোন কাজটি ভালো করে করতে পারেন আর কোন কোন গুণাবলী আপনার মাঝে আছে। আত্মবিশ্বাস আসে নিজের উপর নির্ভরতা থেকে আর এই নির্ভরতা হচ্ছে দক্ষতা ও যোগ্যতার সম্মিলন।

যখন আপনি আপনার দক্ষতাগুলো সম্পর্কে জানবেন তখন ভেতর থেকেই নির্ভরতা খুঁজে পাবেন। তবে হ্যা, কোনো কাজকেই বা কোনো দক্ষতাকেই ছোট বলে মনে করবেন না।

২. সঠিক সম্পর্ক নির্বাচন করুন:

আত্মবিশ্বাসী হতে গেলে আপনাকে এমন কিছু সঙ্গী ও সম্পর্ক নির্বাচন করতে হবে যেখান থেকে আপনি উৎসাহ পাবেন নিজের যোগ্যতা জানতে ও কাজে লাগাতে। চেষ্টা করুন সেইসব মানুষদের সাথে নিজেকে যুক্ত রাখতে যারা অন্যের ভেতরের সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলে। পর্যবেক্ষণ করুন তাদের জীবন যাত্রা ও তাদের কাজের ধরণ।

আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর নিশ্চিত উপায়

৩. নিজেকে প্রাধান্য দিন:

আমরা অনেকেই ভাবি অন্যের অনুমোদন ভীষণ প্রয়োজন যা ছাড়া চলবে না! কিন্তু ব্যাপারটি আসলে তেমন না। আপনি যখন এভাবে ভাবতে শিখবেন যে “অন্যের অনুমোদন বা স্বীকৃতি পেলে ভালো আর না পেলেও চলবে”, তখনি আপনি এক ধাপ আত্মবিশ্বাসী হয়ে গেলেন!

ব্যক্তিজীবনে বা যেকোনো সিদ্ধান্তে নিজের মতামতের উপর আস্থা রাখুন। অন্যের দেখানো পথে চোখ বন্ধ করে না চলে চেষ্টা করুন নিজের সাথে মানানসই পথ তৈরী করে চলতে। এই অভ্যাসগুলোই আপনাকে নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিবে।

৪. বাস্তবিক ধারণা রাখুন নিজের সম্পর্কে:

বিখ্যাত দার্শনিক এরিস্টটল বলেন – “সবসময় সঠিক হওয়ায় আত্মবিশ্বাস নয়, ভুল করতে ভয় না পাওয়াই আত্মবিশ্বাস।”

চমৎকার এই কথাটি আমাদের তৈরী করে এভাবে যে ভুল করা স্বাভাবিক আর তাই সেটা মেনে নিতেও হবে। এতেও তৈরী হয় আত্মবিশ্বাস। আত্মবিশ্বাস নিয়ে উক্তি হিসেবে এটি যুগে যুগে মানুষকে উৎসাহিত করে আসছে।

আত্মবিশ্বাস নিয়ে গল্প পড়তে গেলেও ভাববেন যে এক দিনেই আত্মবিশ্বাস অনেকখানি বেড়ে যাবে তা নয় কিন্তু! সময়ের সাথে ইতিবাচক জীবনযাত্রার মাধ্যমে আত্মবিশ্বাস একটু একটু করে বাড়তে থাকে বা তৈরী হতে থাকে।

এই ইতিবাচক হতে গেলে আপনাকে অবশ্যই নিজের সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা রাখতে হবে। স্বচ্ছ ধারণা থাকলেই আপনি সচেষ্ট হবেন নিজের উপর আস্থা রেখে পথ চলতে আর যেখানে দুর্বলতা আছে, সেটা মেনে নিয়ে কাটিয়ে উঠতে।

৫. কাজ নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করুন:

বিখ্যাত রাজনীতিবিদ ইলিনোর রুজভেল্ট বলেছেন- “প্রতিদিন একটা এমন কোনো কাজ করো যা করতে তোমার ভয় লাগে।

কথাটির মর্ম হচ্ছে আপনি যত বেশি নিজের ভয় ভাঙবেন, তত বেশি আত্মবিশ্বাসী হবেন। আত্মবিশ্বাস বাড়ে যখন আপনি বিভিন্ন ধরণের কাজে নিজেকে যুক্ত করবেন ও সফল হবেন। আর যদি ব্যর্থ হোন, তবে তা থেকে শিক্ষা নিন।

আমাদের সবার ভেতরেই অজানা কিছু দক্ষতা থাকে যা সহজে প্রকাশিত হয়না। নতুন কাজে ও নতুন পরিস্থিতিতে বোঝা যায় মানুষ ও তার দক্ষতা সম্পর্কে। যখন নতুন কাজে নিজের লুকায়িত মেধার প্রকাশ ঘটবে, আপনার নিজের উপর আস্থা ও নির্ভরতা বেড়ে যাবে বহুগুন।

৬. সফলতা উদযাপন করুন:

আত্মবিশ্বাস বাড়াতে নিজের সফলতাগুলো উদযাপন করুন। ধরুন আপনি দীর্ঘদিন গবেষণা করে একটি রিসার্চ পেপার লিখলেন ও সেটি প্রকাশ করার ব্যবস্থা করলেন। হয়তো সবাই এর গুরুত্ব বুঝবে না।

কিন্তু আপনি জানেন এটা আপনার জন্য কতটা আনন্দের। এই আনন্দ নিজেই উদযাপন করুন। শুরুর দিকে যা অনেক কঠিন লাগে, সময়ের সাথে কাজে লেগে থাকলে সেটা সহজ হয়ে যায়। এই যে একটা আনন্দ, এটাই উদযাপন করবেন।

মহাকবি গ্যোটে বলেছেন “যখন আপনি নিজেকে বিশ্বাস করতে শিখবেন, তখনি শিখবেন কিভাবে বাঁচতে হবে।”

৭. শরীর ও মনের নিয়মিত যত্ন নেয়া:

একটা ব্যাপার লক্ষ্য করে থাকবেন যে যখন আপনার শারীরিক ও মানসিক অবস্থা ভালো থাকে, আপনি অন্য দিনের চেয়ে বেশি আনন্দিত থাকেন ও অন্যের সামনে নিজেকে উপস্থাপন করতে আগ্রহী থাকেন। এটাই আত্মবিশ্বাস। আর তাই নিয়মিত নিজের জন্য সময় বের করে কাজের মাঝে শরীর চর্চা ও ধ্যান করবেন। এই সময়টাও উপভোগ করবেন।

কষ্ট মনে হলেও ভাববেন এটা একটা বিনিয়োগ! নিজের স্বাস্থ্যের উপর করা এই সময় ও কষ্ট আপনাকে দীর্ঘদিন সুস্থ রাখবে। যখন মন ও শরীর সুস্থ থাকবে মনে হবে আমি অনেক কিছুই করতে পারবো।

৮. নিজের অর্জনের তালিকা তৈরি করুন:

আপনি যা কিছু অর্জন করেছেন, তা যত ছোটই হোক, সেসবের তালিকা করুন। পাশাপাশি আরো যা যা অর্জন করতে চান সেগুলোকে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করুন। প্রতিটা অর্জন আপনার মাঝে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করতে থাকবে।

কর্মক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর উপায়:

কর্মক্ষেত্র এমন এক জায়গা যেখানে প্রতিনিয়ত নিজের মেধার ও যোগ্যতার পরিচয় দিতে হয়। সফলতাই একমাত্র উপায় এখানে টিকে থাকার। এখানে কর্মক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর কিছু পরীক্ষিত উপায় বলা হলো:

১. প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য জানা:

প্রথম ধাপ হবে কর্মরত প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য সম্পর্কে ভালো করে জানা। কারণ যেখানে কাজ করতে হবে তাদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে ভালো করে জানলে নিজের চেষ্টা সেভাবে সাজানো যাবে।

২. জব ডেসক্রিপশন খেয়াল করা:

এরপর দ্বিতীয় ধাপ হবে জব ডেসক্রিপশন মনোযোগ দিয়ে পড়া। জব ডেসক্রিপশন হলো সেই কাজের তালিকা যা একজন কর্মজীবীকে পালন করতে হয়।

৩. প্রতিদিনের কাজের তালিকা বানানো:

কর্মক্ষেত্রে প্রতিটি দিনই চ্যালেঞ্জের। সময় সীমিত থাকে, প্রতিটি কাজের থাকে নির্দিষ্ট সময়সীমা বা ডেডলাইন। এজন্য সময় ভাগ করে কাজ করে গেলে সফল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এভাবে এক সময় আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়।

৪. সহকর্মীদের প্রতি সহানুভূতি ও শ্রদ্ধা ছড়ানো:

সহকর্মীদের সাথে শ্রদ্ধা আর সহানুভূতি নিয়ে কথা বলা ও এভাবেই সম্পর্ক রক্ষা করে যেতে হবে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সবার সাথে মিশতে পারলে নিজের গ্রহণযোগ্যতা তৈরী হয় যা আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয়।

৫. ভুল থেকে শিক্ষা নেয়া:

মনোযোগী হয়ে কাজ করলেও যদি ভুল হয়ে যায় সেক্ষেত্রে সেটা মেনে নিয়ে শিখতে হবে। আত্মবিশ্বাস মানে কখনোই এমন না যে আমার ভুল হবে না! কিন্তু ভুল ত্রুটি হলে সেখান থেকে শিক্ষা নিলে কাজের ফলাফল ভালো আসে যেটা নিজের উপর আস্থা তৈরী করে।

৬. সিনিয়রদের মতামত নেয়া:

কাজ করতে যেয়ে “আমি সব পারি” চিন্তা থেকে দূরে থাকা দরকার। প্রয়োজনে অবশ্যই সাহায্য নিতে হবে পরামর্শ নিতে হবে অভিজ্ঞদের থেকে। এর ফলে কাজ শেখা ও বোঝা সহজ হয় যা পরবর্তীতে নিজের দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয়।

৭. যোগ্যতা বাড়ানোর চেষ্টা করে যাওয়া:

কর্মস্থলে সবসময় বিভিন্ন প্রশিক্ষণ, মিটিং ও পড়ালেখা করার মাধ্যমে নিজের যোগ্যতা বাড়ানোর চেষ্টা করে যেতে হবে। সময়ের সাথে আমাকে লক্ষ্য করতে হবে যেন উঁচু স্তরের কাজে আমি অংশ নিতে পারি।

৮. নেটওয়ার্কিং বাড়ানো:

একটা কাজের জায়গা আমাদের অসংখ্য গুণী মানুষের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। নিজের কাজের সাথে সরাসরি ও দূরবর্তী সবার সাথেই যোগাযোগ রক্ষা করলে যেমন শেখার সুযোগ থাকে তেমনি নিজের মেধার পরিচয়ও দেয়ার সুযোগ পাওয়া যায়। যোগাযোগ দক্ষতা গড়ে তোলার উপায় জানুন এখানে – https://bdictclub.net/build-communication-skill/


পাবলিক স্পিকিং এ আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর উপায়:

পাবলিক স্পিকিংএ দক্ষ হওয়া আমাদের অনেকেরই স্বপ্ন থাকে। কিন্তু এই স্বপ্ন সফলের পেছনে বাধা হচ্ছে ভয়। কিছু টিপস ফলো করলে আত্মবিশ্বাসের সাথে আপনি একজন ভালো পাবলিক স্পিকার হতে পারবেন। সেই টিপসগুলি হচ্ছে –

১. গবেষণা করা:

প্রথমেই আপনাকে যে বিষয়ে কথা বলতে চান সেটির সম্পর্কে গবেষণা করতে হবে। নিজের অভিজ্ঞতার সাথে মিল রেখে যদি নতুন তথ্য দিতে পারেন, তবে আত্মবিশ্বাসের সাথে বক্তব্য দিতে পারবেন।

২. দর্শক সম্পর্কে জানা:

আপনার দর্শক শ্রোতাদের ব্যাকগ্রাউন্ড, লেখাপড়া, জীবন জীবিকা, ইচ্ছা ও স্বপ্ন নিয়ে খোঁজ নেবেন। এসবের সাথে মিল রেখে বক্তব্য তৈরি করলেই তা আত্মবিশ্বাসের সাথে বলতে পারবেন এবং দর্শক শ্রোতাদেরও ভালো লাগবে।

৩. সহজ ভাষার ব্যবহার:

আপনাকে বক্তব্য প্রদানের সময় সহজ শব্দ ও বাক্য ব্যবহার করতে হবে। সহজেই যদি শ্রোতা বা দর্শকের সাথে বক্তব্য প্রদানের এই যোগাযোগ স্থাপন করতে পারেন, আপনার আত্মবিশ্বাস তৈরী হবে আর শেষ পর্যন্ত কার্যকরী একটি সেশন আপনি সম্পাদন করতে পারবেন।

৪. সমসাময়িক প্রসঙ্গ:

পাবলিক স্পিকিংয়ে চেষ্টা করবেন সমসাময়িক প্রসঙ্গ নিয়ে উদাহরণ দিতে বা কথা বলতে। ছোট বড় সবার জন্য বক্তব্য প্রাসঙ্গিক মনে হবে আর তাদের মনোযোগ বেড়ে যাবে আপনার প্রতি। এতে আপনার আত্মবিশ্বাস বেড়ে যাবে।

৫. বিতর্ককে পাশ কাটানো:

অনেক সময় আত্মবিশ্বাস ভেঙে যায় যখন আমার নিজের বক্তব্যকে কেউ চ্যালেঞ্জ করে বসে। এমন পরিস্থিতি আসবেই, এটা আগে থেকেই ভেবে রাখবেন। যেটা করবেন তা হলো বিপরীত বক্তব্য কে অস্বীকার না করে বলবেন আপনি যেটা বলছেন সেটা কেন ও কোন পরিস্থিতিতে কার্যকরী। এর ফলে বিতর্ক হবে না আর আপনার ও আত্মবিশ্বাস অটুট থাকবে।


আত্মবিশ্বাস নিয়ে বই

আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি নিয়ে আরো জানতে মন চাইলে পড়ে ফেলুন বিখ্যাত লেখক ব্রায়ান ট্রেসি লিখিত ”দি পাওয়ার অফ সেলফ কনফিডেন্স বইটি।

আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি নিয়ে ৭টি আলাদা চ্যাপ্টার আছে এই বইতে। যেকোনো পাঠকই পড়তে গেলে নিজের সাথে মেলাতে পারবেন বর্ণনা গুলো।

আত্মবিশ্বাস নিয়ে বই

যেমন কিছু চ্যাপ্টার এর বিষয় হচ্ছে –

  • আত্মবিশ্বাসের মূল ভিত্তি
  • উদ্দেশ্য ও ব্যক্তিগত শক্তি
  • যোগ্যতা ও ব্যক্তিগত দক্ষতা অর্জন
  • আত্মবিশ্বাসের অভ্যন্তরীন খেলা
  • আত্মবিশ্বাস কাজে লাগানো

লেখকের জীবনে দেখা বিভিন্ন মানুষের থেকে প্রাপ্ত জ্ঞান কাজে লাগিয়েছেন তিনি এই বই লিখতে। শুধু আত্মবিশ্বাস অর্জন বা বৃদ্ধি নিয়েই কথা হয়নি, এই বইতে আত্মবিশ্বাস কিভাবে অন্যান্য গুণের সাথে সম্পর্কিত সেটাও বলা হয়েছে। আত্মবিশ্বাসের পূর্ণ ব্যবহার করে কিভাবে আপনি জীবনে উন্নতির শিখরে পৌঁছাতে পারেন, সে কোথাও বলা আছে।

শেষকথা

“যেখানে আত্মবিশ্বাস বা আশ্বাস নেই, সেখানে কোন ‍বৃহৎ সাহস থাকতে পারেনা এবং আমরা যা পারব বলে মনে করি, তা অবশ্যই করতে পারব – এই বিশ্বাস রাখার মাধ্যমেই অর্ধেক লড়াই শেষ হয়ে যায়” – ওরিসন স্যাট মার্ডান

আপনার আত্মবিশ্বাসের পথে আজই যাত্রা শুরু হোক এই আর্টিকেলটি শেয়ার করার মাধ্যমে।

Author

আত্মবিশ্বাস কী? আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর ৮টি নিশ্চিত উপায়

মুরাদ খান (Murad Khan) এর ছোটবেলা থেকেই প্রযুক্তির প্রতি আলাদা আগ্রহ আছে। প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে মানুষের জীবনে ভালো পরিবর্তন আনার জন্য কাজ করতে ভালোবাসেন। । কর্মজীবন শুরু করেন ফ্রিল্যান্সিং দিয়ে, পরে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে যোগ দেন। নিজের চেষ্টায় অর্জন করেছেন ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিভিন্ন দক্ষতা। কাজ করছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ প্রযুক্তি নিয়ে আগ্রহী মানুষের জীবন মান উন্নয়নে। এই লক্ষ্যেই বিডি আইসিটি ক্লাবের প্রতিষ্ঠা।

Leave a Comment

error: Content is protected !!