fbpx

এম এস ওয়ার্ডের কাজ [১০টি প্রধান ক্ষেত্র]

এম এস ওয়ার্ডের কাজ [১০টি প্রধান ক্ষেত্র]

এম এস ওয়ার্ড ব্যবহার করে আপনি ব্যক্তিগত বা ব্যবসায়িক প্রয়োজনে চমৎকার সব ডকুমেন্ট তৈরি করতে পারবেন। যেমনঃ রিসিউম, চিঠিপত্র, সিভি, আবেদনপত্র, চিঠি, ফর্ম, প্রচারপত্র, বিজনেস কার্ড, ক্যালেন্ডার, ই-বুক, রিপোর্ট, প্রজেক্ট প্রোফাইল এবং ই-মেইল নিউজলেটার সহ আরো অনেক কিছু।  এম এস ওয়ার্ডের ব্যবহারের কারণে কাগজ কলমের দিন ফুরিয়ে এখন Paperless Environment এর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বর্তমান ইন্ডাস্ট্রিগুলো। 

ব্যক্তিগত, ব্যবসায়িক, মার্কেটিং, শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে এম এস ওয়ার্ডের ব্যবহার অনেক বেশি। প্রতিটি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান তাদের অফিসের যাবতীয় দাপ্তরিক কাজ সম্পাদনে এম এস ওয়ার্ডের বিকল্প অন্য কোন সফ্‌টওয়্যার ব্যাবহারের চিন্তাও করতে পারে না। ডাটা এন্ট্রি অপারেটর, অফিস সহকারী, টাইপিস্ট সহ অনেক কর্মকর্তা এবং কর্মচারীগণ এম এস ওয়ার্ড ব্যবহার করে অফিসের দাপ্তরিক কাজ সম্পাদন করেন। 

আপনি যদি জানতে আগ্রহী হন যে এম এস ওয়ার্ড ব্যবহার করে কী কী করা যায় !  আজকের এই আর্টিকেলেটি আপনার জন্য।  এর মাধ্যমে আমি আপনাকে জানিয়ে দিব  এম এস ওয়ার্ড ব্যবহার করে  দৈনন্দিন জীবনে কোন কোন কাজ করা যায়। তবে এর পূর্বে আপনাকে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড সম্পর্কে জানতে হবে। 

Table of Contents

এম এস ওয়ার্ড ওয়ার্ড কি?

এম এস ওয়ার্ড/ মাইক্রোসফট ওয়ার্ড হচ্ছে একটি জনপ্রিয় ওয়ার্ড প্রসেসিং সফ্‌টওয়্যার যা ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহার করা হয়। এটি বিশ্বের ব্যবসায়িক কাজে সর্বাধিক ব্যবহৃত একটি সফ্‌টওয়্যার। এম এস ওয়ার্ড ব্যবহার করে একটি অফিসের দৈনন্দিন দাপ্তরিক কাজ সহজে ও দ্রুততার সাথে সম্পাদন করা যায়।

এম এস ওয়ার্ড ব্যবহার করে যেসকল কাজ করা  যায়ঃ

এম এস ওয়ার্ডের বেসিক ও এডভ্যান্স স্কিল থাকলে আপনি প্রায় সকল ধরণের ডকুমেন্ট তৈরি ও সম্পাদনা করতে পারবেন। ব্যবসায়, শিক্ষাক্ষেত্রে, মার্কেটিং, ই-মেইল নিউজলেটার, রিপোর্ট, চিঠিপত্র, প্রচারপত্র,  প্রজেক্ট  প্রোফাইল, বিজনেস কার্ড, ছবি সম্বলিত কর্মচারীদের তথ্য, মিটিং ও সেমিনারে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস প্রিন্ট, শেয়ার এবং প্রজেক্টরের সাহায্যে প্রেজেন্টশন সহ অন্যান্য দাপ্তরিক ও ব্যক্তিগত কাজে এম এস ওয়ার্ড ব্যবহার করা যায়।

বিশ্বের সর্বাধিক জনপ্রিয় সৃজনশীল কাজে ব্যবহৃত সফ্‌টওয়্যার হচ্ছে এম এস ওয়ার্ড ।  শুধুমাত্র ব্যবসায় বা বাণিজ্যিক ক্ষেত্রেই নয় শিক্ষাক্ষেত্রে ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের নোটস ও অ্যাসাইনমেন্ট প্রস্তুত করতে এম এস ওয়ার্ড ব্যবহার করে এবং শিক্ষকগণ লেকচার শীট তৈরিতেও এম এস ওয়ার্ড ব্যবহার করে থাকেন।  

এম এস ওয়ার্ড এর সাহায্যে Error less ডকুমেন্ট তৈরি করা যায়। এর অভ্যন্তরীণ Spell Checker এবং Dictionary থাকায়  আপনার ডকুমেন্টের লিখাগুলোকে শুদ্ধ করে নিতে পারবেন।

এম এস ওয়ার্ডের স্কিল হচ্ছে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ কম্পিউটার স্কিল যার উপরে সকল চাকুরিজীবি, পেশাজীবি এবং ব্যবসায়ী-কে  নির্ভরশীল হতে হয়। অর্থাৎ আপনাকে এম এস ওয়ার্ড সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা রাখতেই হবে।  

১০টি প্রধান ক্ষেত্রে এম এস ওয়ার্ডের কাজসমূহঃ  

১। কর্মক্ষেত্র ও ব্যবসায়িক কাজে এম এস ওয়ার্ডঃ 

আপনার দৈনন্দিন ব্যবসায়িক কাজ পরিচালনার জন্য বিভিন্ন ধরণের ডকুমেন্ট এম এস ওয়ার্ডের মাধ্যমে তৈরি করতে পারবেন। এর মাধ্যে রয়েছে লেটারহেড, বিল-ভাউচার, ক্যাশ মেমো, যোগদানপত্র, চালান, রিসিপ্ট ও কর্মচারীদের আইডি কার্ড। এম এস ওয়ার্ডের আপডেট ভার্সনে অনেকগুলো টেমপ্লেইট দেওয়া আছে। সেগুলো ব্যবহার করে অফিসের যাবতীয় ডকুমেন্ট সম্পাদনার কাজ ও দ্রুততার সাথে করা যায়। 

ই-মেইল মার্কেটিং এর জন্য নিউজলেটার তৈরি করা ছাড়াও চাইলে  HTML format এ সেইভ করে ব্যবহারকারীদের এটাচমেন্ট ফাইল হিসেবে পাঠাতে পারবেন যাতে তাঁরা কম্পিউটার ও মোবাইলের স্ক্রিনে যে কোন ওয়েব ব্রাউজারের মাধ্যমে  সহজে ওপেন করতে পারেন। ।

এছাড়াও ভিন্ন ভিন্ন নাম ও ঠিকানা  ব্যবহার  করে এম এস ওয়ার্ডের Mail Merge অপশনের মাধ্যমে একসাথে অসংখ্য মানুষকে ই-মেইল পাঠানো যায়। যে কোন ওয়ার্ড প্রসেসিং সফটওয়্যারের তুলনায় এম এস ওয়ার্ডের মাধ্যমে অফিসিয়াল কাজকর্ম খুব সহজেই সমাধান করা যায়। 

এটি ইনস্টল করার পর কাজ করতে গিয়ে যদি কোন সমস্যায় পড়েন তাহলে আলাদা কোন সার্চ ইঞ্জিনে গিয়ে সার্চ করার দরকার নেই। এম এস অফিসের আপডেট ভার্সনের অভ্যন্তরেই সেই বিষয়ে সার্চ করে আপনি বিভিন্ন টুলস, ফাংশন ও এর ব্যবহার সম্পর্কে টিউটোরিয়াল পেয়ে যাবেন। 

২। শিক্ষাক্ষেত্রে এম এস ওয়ার্ডের ব্যবহারঃ

শিক্ষাক্ষেত্রে এম এস ওয়ার্ড একটি উত্তম টুলস হিসেবে বিবেচিত হয়। শিক্ষকগণ বিভিন্ন ধরণের Text, Word Art ও Picture ব্যবহার করে আকর্ষণীয় লেকচারশীট প্রস্তুত করতে পারেন। ছাত্র-ছাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী প্রজেক্টর স্ক্রিনে সেটি দেখাতে পারেন কিংবা প্রিন্ট করে তাদেরকে দিতে পারবেন। অন্যদিকে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র  প্রস্তুত বা এডিট করা  এবং বিভিন্ন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে দরখাস্থ ও চিঠিপত্র লিখা যাবে এম এস ওয়ার্ড ব্যবহার করে।

৩। ব্যক্তিগত কাজে এম এস ওয়ার্ডের ব্যবহারঃ

এম এস ওয়ার্ডের পূর্ব নির্ধারিত টেমপ্লেইট ব্যবহার করে কিংবা Insert ও Function মেনুর বিভিন্ন অপশন ব্যবহার করে জন্মদিনের উইশকার্ড, নিমন্ত্রণপত্র, ব্যক্তিগত চিঠি ইত্যাদি লেখা  যায়।  

আপনি চাইলে ব্যক্তিগত ডায়েরি হিসেবে  এম এস ওয়ার্ড ব্যবহার করতে পারবেন যেখানে দৈনন্দিন জীবনের  যে কোন স্মরণীয় ঘটনা কিংবা কাজ-কর্ম লিখে রাখা যাবে।

৪। রিসিউম, সিভি, নোটস ও অ্যাসাইনমেন্ট তৈরিতে ব্যবহারঃ

এম এস ওয়ার্ডে Text নিয়ে কাজ করা অত্যন্ত সহজ। সুতরাং নোটস ও অ্যাসাইনমেন্ট তৈরিতে একজন শিক্ষার্থীকে এটি অনেক বেশি  সহায়তা করে থাকে। এখানে থাকা Text Formatting অপশন যথাঃ Paragraph, Fonts Styles ইত্যাদি ব্যবহার করে রিসিউম, সিভি ও নোটস রেডি  করা অনেক সহজ হওয়ায় ছাত্রছাত্রীরা এটি অনায়েসে ব্যবহার করতে পারে।  এছাড়াও তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী Cover Page, Watermark এবং Table Insert করে তাদের নোটস ও অ্যাসাইনমেন্ট প্রেজেন্টেবল করতে পারে ।

৫। ই-মেইল নিউজ লেটার, আর্টিকেল এবং বই লিখতে ব্যবহারঃ

এম এস ওয়ার্ড বাজারে আসার পর হতে লক্ষ লক্ষ মানুষ বিভিন্ন ধরণের ডকুমেন্ট তৈরিতে এটি ব্যবহার করে আসছে। 

একটি বই লিখার জন্য Cover Page, Content, Header & Footer, Image Adjustments, Text Alignment ও Text highlight এই ফাংশনগুলো প্রয়োজন হয় যা এম এস ওয়ার্ডে রয়েছে। এসকল ফাংশন ব্যবহার করে বই লিখা, কভার ডিজাইন থেকে শুরু করে প্রিন্ট করা যায়। । 

ফাইল মেনু থেকে সেইভ করার সময় ডকুমেন্ট টাইপ পরিবর্তন করে PDF ফর্মেটে সিলেক্ট করে আপনি চাইলে e-Book  বা PDF ডকুমেন্ট তৈরি করতে পারবেন। তবে PDF ফর্মেটে সেইভ করার পূর্বে আপনার ফাইলের মুল কপি সংরক্ষণ করে নিন যাতে এর ফাইল টাইপ পরিবর্তন করলেও পরবর্তীতে ব্যবহারের সুযোগ থাকে।

৬।  PDF Convert, Transcribe লিখা ও বিভিন্ন ডকুমেন্ট তৈরি ও সম্পাদনে ব্যবহারঃ 

আপনি চাইলে এম এস ওয়ার্ডে বাংলায় বা অন্যান্য ভাষা টাইপ করতে পারবেন। এম এস ওয়ার্ডে বাংলা লিখার জন্য বাংলা সফ্‌টওয়্যার অভ্র কিংবা বিজয় এবং ফন্ট  NikoshBAN, Siyam Rupali, Sutonnymj ইত্যাদি ব্যবহার করতে হবে। 

৭। অনলাইনের  Collaborate করে টিম মেম্বারদের সাথে কাজ করাঃ

অনেক সময় একটি ডকুমেন্টের কাজ একসাথে অনেকজন মিলে করতে হয়। আবার একেক জন্য একেক জায়গায় থাকায় সেই কাজটি অনেক কঠিন মনে হয়। এম এস ওয়ার্ডের আপডেট অনলাইন ভার্সন Office 365 ব্যবহার করে অনলাইনের মাধ্যমে টিম মেম্বারগণ Collaborate করে কাজটি সহজেই করতে পারবেন এবং তাদের তৈরিকৃত ডকুমেন্টটি One Drive এ সেভ করে অফিসের খরচ ও সময় দুটোই সাশ্রয় করা সম্ভব হবে।

৮। অনলাইন/অফলাইনে ব্যবসায় করে আয় করাঃ

বিভিন্ন ডকুমেন্ট তৈরি ও সম্পাদনা PDF Convert ও Transcribe লিখতে এম এস ওয়ার্ডের ব্যবহার অনেক বেশি। একটি ভিডিও ফাইলের অনুবাদ/Transcribe করতে চাইলে এম এস ওয়ার্ডের নোট করে সেটি ব্যবহার করা যায়। এছাড়াও পূর্বে লিখিত কোন ডকুমেন্ট কপি ও সম্পাদনার কাজ ও এখানে করা যায়।

আপনি ইতোমধ্যে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এম এস ওয়ার্ডের ব্যবহার সম্পর্কে অবগত হয়েছেন। তাই এই বিষয়ে আপনার দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে অনলাইন/অফলাইন থেকে আয় করতে পারবেন।  আপনি যদি এম এস ওয়ার্ডের বিভিন্ন ধরণের ডকুমেন্ট তৈরি ও সম্পাদনায় দক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে ফ্রিল্যান্সিং-এ ডাটা এন্ট্রি টাইপের কাজগুলো করে কিংবা অফলাইনে একটি কম্পিউটার ও প্রিন্টার নিয়ে এম এস ওয়ার্ডের বিভিন্ন সার্ভিস মানুষকে দিয়ে আয় করতে পারবেন ।

৯। চাকুরি পেতে এম এস ওয়ার্ড যেভাবে সাহায্য করবেঃ

এম এস অফিসের ব্যাসিক জ্ঞান চাকুরিক্ষেত্রে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ স্কিল যেটি আপনার সিভি কিংবা রিসিউমে হাইলাইট করতে পারবেন। । আপনি যদি এম এস ওয়ার্ডের ব্যবসায়িক ও বাণিজ্যিক ব্যবহার সম্পর্কে জানেন এর মানে হলো এর বেসিক ও এডভ্যান্স স্কিল আপনাকে একটি মানসম্মত চাকুরি পেতে অনেক বেশি সহায়তা করবে।

১০। এম এস ওয়ার্ড এর মাধ্যমে আয়ের সুযোগঃ

এম এস ওয়ার্ডের বাণিজ্যিক ব্যবহার আমাদের ধারণার বাইরে। এম এস অফিস সম্পর্কে দক্ষতা অর্জন শেষে অন্যকে চাইলে প্রশিক্ষণ দিয়েও আয় করা সম্ভব। আপনাদ দক্ষতা ব্যবহার করে ভিডিও বানিয়ে ইউটিউবে বা ওয়েবসাইটে আপলোড দিয়ে মনিটাইজেশন করার পর Google Adsense এর মাধ্যমে আয় করতে পারেন।

এখানে আমি মূলত এম এস ওয়ার্ডের কাজ সম্পর্কে অল্পবিস্তর ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এটি এমন একটি সফ্‌টওয়্যার যার জ্ঞান একজন কর্মী, ব্যবসায়ী এবং  উদ্যোক্তাসহ সকলকেই বেসিক ধারণা রাখতে হবে। ওয়ার্ড প্রসেসিং এর ক্ষেত্রে  কম খরচে ও খুব দ্রুততার সাথে কাজ করার জন্য এটি অনেক বেশি কার্যকর একটি সফ্‌টওয়্যার।

Author

মুরাদ খান (Murad Khan) এর ছোটবেলা থেকেই প্রযুক্তির প্রতি আলাদা আগ্রহ আছে। প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে মানুষের জীবনে ভালো পরিবর্তন আনার জন্য কাজ করতে ভালোবাসেন। । কর্মজীবন শুরু করেন ফ্রিল্যান্সিং দিয়ে, পরে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে যোগ দেন। নিজের চেষ্টায় অর্জন করেছেন ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিভিন্ন দক্ষতা। কাজ করছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ প্রযুক্তি নিয়ে আগ্রহী মানুষের জীবন মান উন্নয়নে। এই লক্ষ্যেই বিডি আইসিটি ক্লাবের প্রতিষ্ঠা।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!