আপনি কি একজন ফ্রিল্যান্সার হতে চান? তাহলে জেনে নিন এ বছরের সবচেয়ে বেশি চাহিদা সম্পন্ন ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ।
ফ্রিল্যান্সিং বর্তমান সময়ে একটি জনপ্রিয় বিকল্প কর্মসংস্থান। অনেক মানুষ চাকরি ছাড়াই অনলাইনে নিজের সময় এবং সুবিধামত নিজের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে লক্ষ আয় করছে।
ফ্রিল্যান্সিং কাজের অনেক সুবিধা রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে:
- নিজের রুটিনে কাজ করার স্বাধীনতা
- সমমানের দেশীয় চাকুরির চেয়ে বেশি আয়ের সম্ভাবনা
- ভবিষ্যতে ব্যবসা গড়ে তোলার সুযোগ
এই সুযোগটিকে কাজে লাগিয়ে আপনি আপনার স্বপ্নের ক্যারিয়ার গড়তে পারেন। তবে, ফ্রিল্যান্সিং কাজ শুরু করার আগে, আপনাকে প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
ফ্রিল্যান্সিং এ প্রচুর কাজ রয়েছে যেগুলোকে প্রধান ৮টি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা যায়-
- Development & IT
- Design & Creative
- Finance & Accounting
- Admin & Customer Support
- Engineering & Architecture
- Legal
- Sales & Marketing
- Writing & Translation
এই প্রত্যেকটা ক্যাটাগরির মধ্যে অনেক ধরণের কাজ রয়েছে। । বিস্তারিত তালিকা দেখুন Upwork Freelance Job List এ।
তবে এই আর্টিকেলে আমি আলোচনা করবো যেগুলোর জনপ্রিয়তা বেশি সেগুলো নিয়ে।
ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ: ১০টি ট্রেন্ডিং কাজ
নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং পেশায় প্রবেশ করার শুরুতে ফ্রিল্যান্সিং এর সবচেয়ে চাহিদা সম্পন্ন ১০টি ট্রেন্ডিং কাজ সম্পর্কে জেনে নেওয়া জরুরি।
নিম্নোক্ত আলোচনায় আমি প্রত্যেকটি কাজের
- সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা,
- চাকুরির সুযোগ,
- বেতন/প্রতি ঘন্টায় আয়,
- শিখার সময়,
- কি কি শিখতে হয়,
- শিখার জন্য মানসম্মত ভিডিও ও কোর্স লিংক দিব
অতএব প্রতিটা টপিক সময় নিয়ে পড়ুন।
১. গ্রাফিক্স ডিজাইন (Graphics Design)
ফ্রিল্যান্সিং জগতে গ্রাফিক্স ডিজাইন সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং অনেক চাহিদা সম্পন্ন কাজের মধ্যে একটি। এই পেশায় আয়ের পরিমাণ আপনার দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, এবং কাজের ক্ষেত্রের উপর নির্ভর করে।
এই পেশায় চাকরির সুযোগও অনেক। বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠানে, যেমন বিজ্ঞাপনী সংস্থা, মিডিয়া হাউস, প্রকাশনা সংস্থা, ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি, ইত্যাদিতে গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের চাহিদা রয়েছে। এছাড়াও, আপনি ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করতে পারেন।
আয়ের সম্ভাবনাঃ
বাংলাদেশে একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনারের বেতন শুরুতে মাসিক ১৫,০০০ টাকা হতে পারে। অভিজ্ঞতা বাড়ার সাথে সাথে বেতনও বাড়তে থাকে। একজন সিনিয়র গ্রাফিক্স ডিজাইনার মাসিক ৩০,০০০ – ৫০,০০০ টাকা বেতন পান। আর একজন ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর মাসিক ৭০,০০০ – ১,০০,০০০ টাকা বা তারও বেশি বেতন পান।
শেখার সময়ঃ
যদি আপনার কোন প্রাথমিক দক্ষতা না থাকে, তাহলে গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখতে আপনার প্রায় ৬ মাস থেকে ১ বছর সময় লাগতে পারে।
গ্রাফিক্স ডিজাইন এ যা শিখতে হবেঃ
এই সময়ের মধ্যে, আপনাকে গ্রাফিক্স ডিজাইনের মূল বিষয়গুলি, যেমন রঙ তত্ত্ব, টাইপোগ্রাফি, এবং কম্পোজিশন শিখতে হবে। এছাড়াও, আপনাকে বিভিন্ন গ্রাফিক্স ডিজাইন সফটওয়্যার এর ব্যবহারও শিখতে হবে-
গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ সমূহ হলো:
- লোগো ডিজাইন
- বিজনেস কার্ড ডিজাইন
- ফন্ট ডিজাইন
- UI/UX ডিজাইন
- স্টেশনারি ডিজাইন
- আইকন ডিজাইন
- টাইপোগ্রাফি
- কার্টুন এন্ড কমিক ডিজাইন
- সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টার ডিজাইন
- ওয়েব ব্যানার ডিজাইন
- প্রেজেন্টেশন ডিজাইন
- ভেক্টর ট্রেসিং
- পোস্টার ডিজাইন
- রিজিউমি ডিজাইন
- ফ্লায়ার ডিজাইন
- ব্রোশিওয়র ডিজাইন
- ক্যাটালগ ডিজাইন
- মেনু ডিজাইন
- ইমেজ এডিটিং
- ফ্যাশন ডিজাইন
- প্যাকেজিং এবং লেবেল ডিজাইন
- ইনভাইটেশন ডিজাইন
- বুক ডিজাইন
- টি-শার্ট ডিজাইন
গ্রাফিক্স ডিজাইন শেখার জন্য কোর্স:
- Graphic Design Bangla Tutorial 🔥 ফ্রি গ্রাফিক ডিজাইন কোর্স
- Professional Graphic Design Course
- Graphic Designing with Photoshop
- সরকারি Nactar গ্রাফিক্স ডিজাইন কোর্স ২০২৩
- SEIP BD Govt. Graphics Design Course in your District
২. কনটেন্ট রাইটিং (Content writing)
ফ্রিল্যান্স কনটেন্ট রাইটিং এখন একটি জনপ্রিয় ক্যারিয়ার পথ। বর্তমানে অনেক Ai Writing টুল থাকলেও কন্টেন্ট রাইটারদের চাহিদা কমেনি বরং বেড়েছে।
সাধারনত যাদের লেখালেখি করতে ভালো লাগে তাদের জন্য এই ফ্রিল্যান্সিং কনটেন্ট রাইটিং সেক্টরটি বেস্ট।
শেখার সময়ঃ
কনটেন্ট রাইটিং শিখতে কতদিন সময় লাগবে সেটা নির্ভর করে সম্পূর্ণ আপনার দক্ষতা এবং আগ্রহের উপর। শুরুতে আপনার কনটেন্ট রাইটিং শিখতে সময় লাগতে পারে ৬ মাস থেকে ১ বছর পর্যন্ত ।
যা শিখতে হবেঃ
এই সময়ের মধ্যে, আপনাকে কনটেন্ট রাইটিংয়ের মূল বিষয়গুলি, যেমন ভাষাগত দক্ষতা, গবেষণা দক্ষতা এবং সৃজনশীলতা শিখতে হবে। পাশাপাশি চলমান ট্রেন্ড ও পাঠক চাহিদা বুঝে SEO অপটিমাইজড আর্টিকেল লেখা শিখতে হবে। তাহলেই আপনি সফল হতে পারবেন।
আয়ের সম্ভাবনাঃ
Upwork এ ফ্রিল্যান্স কনটেন্ট রাইটারদের আয় প্রতি ঘন্টায় সাধারণত ১৫-৪০ মার্কিন ডলারের মধ্যে থাকে। তবে, অভিজ্ঞ এবং দক্ষ ফ্রিল্যান্স কনটেন্ট রাইটাররা প্রতি ঘন্টায় ৮৫ মার্কিন ডলার বা তার বেশি আয় করতে পারে।
বিভিন্ন প্রকারের কনটেন্ট রাইটিং রয়েছে, যেমন-
- ব্লগ আর্টিকেল,
- কপিরাইটিং,
- সোশ্যাল মিডিয়া রাইটিং,
- ইমেল মার্কেটিং কন্টেন্ট,
- এক্সপার্ট রাইটিং,
- নিউজ রাইটিং,
- ক্রিয়েটিভ রাইটিং,
- ই-বুক রাইটিং,
- টেকনিক্যাল রাইটিং,
- রিজিউমি রাইটিং,
- পডকাস্ট রাইটিং,
- ট্রান্সলেশন,
- ট্রান্সক্রিপশন,
- রিসার্চ রাইটিং
কনটেন্ট রাইটিং এর জন্য প্রয়োজনীয় টুলসগুলি হল:
কনটেন্ট রাইটিং শেখার জন্য এই কোর্সগুলো দেখতে পারেন-
৩. এডমিন ও কাস্টমার সাপোর্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট
ফ্রিল্যান্সিং এর এডমিন ও কাস্টমার সাপোর্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট সেকশনের অনেক প্রকারের কাজ রয়েছে। তার মধ্যে ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট একটা গুরুত্বপূর্ণ স্কিল ।
যা শিখতে হবেঃ
একজন ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্টের কাজ হলো ক্লায়েন্টের হয়ে ক্লায়েন্টের দেওয়া কাজ করা। এর মানে আপনার অফিস যাওয়ার প্রয়োজন পড়বে না, আপনি ঘরে বসেই ক্লায়েন্টের অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করতে পারবেন।
শেখার সময়ঃ
ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হওয়ার জন্য একেক জনের একেক সময় লাগতে পারে, কিন্তু সাধারণত এটি শিখতে ৩-৬ মাস মাস পর্যন্ত লাগতে পারে।
আয়ের সম্ভাবনাঃ
ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্টদের আয় তাদের দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, এবং কাজের ধরণের উপর নির্ভর করে। ইন-হাউস ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্টদের গড় বেতন প্রতি ঘন্টায় $15 থেকে $30 এর মধ্যে হয়। ফ্রিল্যান্স ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্টদের গড় আয় প্রতি ঘন্টায় $20 থেকে $50 এর মধ্যে হয়।
ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট একটি ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয় ক্যারিয়ার। এই ক্যারিয়ারের জন্য চাহিদা বাড়ছে কারণ ব্যবসাগুলি আরও বেশি দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার লোকেদের প্রয়োজন যারা দূর থেকে কাজ করতে পারে।
ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্টের কাজের ধরণঃ
- ডাটা এন্ট্রি
- গুরুত্বপূর্ণ ফাইল ম্যানেজ করা
- সময়সূচি তৈরি করা
- সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজ করা
- কাস্টমার সাপোর্ট দেওয়া
- গবেষণা এবং তথ্য সংগ্রহ করা
- ইমেইল মার্কেটিং
- লিড জেনারেশন ইত্যাদি
ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট শেখার জন্য এই কোর্সগুলো দেখতে পারেন-
৪. ডিজিটাল মার্কেটিং (Digital Marketing)
ডিজিটাল মার্কেটিং হল ইন্টারনেট এবং অন্যান্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে পণ্য বা সেবার প্রচার। ডিজিটাল মার্কেটিং ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করলে আয়ের পরিমাণ নির্ভর করে আপনার দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং কাজের স্থানের উপর।
এই ইন্ডাস্ট্রিতে চাহিদা দিন দিন বাড়ছে, তাই দক্ষ ডিজিটাল মার্কেটারদের জন্য চাকরির সুযোগ অনেক।
শেখার সময়ঃ
ডিজিটাল মার্কেটিং এর বেসিক শিখতে ৪-৬ মাস লাগে। আর এর কোন একটা বিষয়ে কাজ করার মত দক্ষ হতে প্রায় ১ বছরের মতো সময় লেগে যায়।
আয়ের সম্ভাবনাঃ
বাংলাদেশে ডিজিটাল মার্কেটারের বেতন প্রতি মাসে গড়ে ৳২৫,০০০ থেকে ৳১,০০,০০০ এর মধ্যে হতে পারে। একজন ফ্রিল্যান্স ডিজিটাল মার্কেটারের প্রতি ঘন্টায় রেট $15-$45 হয়ে থাকে। তার কাজের পরিমাণ এবং ক্লায়েন্টের উপর নির্ভর করে আরও বেশি হতে পারে।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর ক্যাটাগরিসমূহ হলোঃ
- এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO)
- এসইএম বা সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং (SEM)
- কনটেন্ট মার্কেটিং (Content Marketing)
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate Marketing)
- সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং (Social Media Marketing)
- ইমেইল মার্কেটিং (Email Marketing)
- সিপিএ মার্কেটিং (CPA)
- মোবাইল মার্কেটিং (Mobile Marketing)
- ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং (Influencer Marketing)
ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার জন্য এই কোর্সগুলো দেখতে পারেন-
- সেরা ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স প্যাসিভ জানাল
- Digital Marketing Tutorial for Beginners in Bangla 2023
- ডিজিটাল মার্কেটিং বান্ডেল
- সরকারি ডিজিটাল মার্কেটিং
৫. সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (Search engine optimization -SEO)
আমরা যখন গুগলে বা অন্য কোনো সার্চ ইঞ্জিনে কোনো কিছু খুজার জন্য লিখে থাকি, তখন অনেকগুলো ওয়েবসাইটের মধ্যে প্রথম পেজে কিছু ওয়েবসাইট আসে। একটি ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পেজে আনার জন্য যে কাজগুলো করা হয় সেটাকে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বলে।
শেখার সময়ঃ
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এ কাজ শুরু করার মত দক্ষ হতে সাধারণত সময় লাগে ৬ মাস থেকে ১ বছর। কিন্তু বেসিক এসইও শিখতে ১ থেকে ২ মাস সময় লাগবে।
আয়ের সম্ভাবনাঃ
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO) করে আপনি মাসে লক্ষাধিক টাকা আয় করতে পারেন। তবে একজন নতুন SEO বিশেষজ্ঞের জন্য প্রথম দিকে মাসে ৫০,০০০ থেকে ১ লক্ষ টাকা আয় করা সম্ভব।
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন শেখার জন্য এই কোর্সগুলো দেখতে পারেন-
- SEO Course for Beginners
- SEO Full Course in Bangla | Basic SEO course | Khalid Farhan
- সেরা এসইও কোর্স প্যাসিভ জানাল
৬. ভিডিও এডিটিং (Video editing)
ছোট বড় সকল প্রতিষ্ঠানেই ভিডিও এডিটরদের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। ভিডিও কাট, ট্রিম, ক্লিপগুলোকে সাজানো, ভিডিওর সাথে মিল রেখে মিউজিক, সাউন্ড ইফেক্ট যোগ করা এবং তাদেরকে একটি সম্পূর্ণ নতুন ভিডিওতে রূপান্তর করা হচ্ছে ভিডিও এডিটিং এর কাজ। অ্যানিমেশন, মোশন গ্রাফিক্স বানানো ইত্যাদিও ভিডিও এডিটিং এর মধ্যে পড়ে।
শেখার সময়ঃ
মূল বিষয়গুলি শিখতে সাধারণত কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে। আর ফ্রিল্যান্সিং এ কাজ করা বা চাকুরি করার মত দক্ষ হয়ে উঠতে ৬ মাস থেকে ১ বছর লাগতে পারে।
আয়ের সম্ভাবনাঃ
বাংলাদেশের মার্কেটপ্লেসে একজন ভিডিও এডিটরের বেতন সাধারণত মাসিক ২০,০০০ থেকে শুরু হয়ে অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার ভিত্তিতে ১ লাখ টাকাও হতে পারে। আন্তর্জাতিক মার্কেটে অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতার উপর ভিত্তি করে ফ্রিল্যান্স ভিডিও এডিটরের রেট প্রতি ঘন্টায় $25 – $200 হতে পারে।
ফ্রিল্যান্সিং ক্ষেত্রে ভিডিও এডিটিং এর কাজ সমূহ হল:
- সোসাল মিডিয়া ভিডিও এডিটিং
- মিউজিক ভিডিও এডিটিং
- ট্রাভেল ভিডিও এডিটিং
- ওয়েডিং ভিডিও এডিটিং
- ইউটিউব ভিডিও এডিটিং
- ইভেন্ট ভিডিও এডিটিং
- এনিমেটেড ভিডিও
- ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট
- শর্ট ভিডিও
- এডুকেশনাল ভিডিও এডিটিং ইত্যাদি।
ভিডিও এডিটিং এর জন্য প্রয়োজনীয় সফটওয়ারগুলো হলঃ
- এডোবি প্রিমিয়ার প্রো
- ফিলমোরা
- ক্যামটাসিয়া
- এডোবি আফটার ইফেক্টস
- ভি এফ এক্স
- ফাইনাল কাট প্রো ফোর মেক
- ক্যানভা
ভিডিও এডিটিং শেখার জন্য এই কোর্সগুলো দেখতে পারেন-
- How to start Video Editing from 0 (Beginner’s Guide)
- Video Editing with Premiere Pro
- প্রফেশনাল ভিডিও এডিটিং
৭. সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট (Social Media Management)
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের লক্ষ্য হল ব্র্যান্ড সচেতনতা বাড়ানো, গ্রাহকদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলা এবং বিক্রয় বা অন্যান্য ব্যবসায়িক লক্ষ্য অর্জন করা।
অনেক ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠান আছে যাদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ম্যানেজ করার জন্য একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার রাখে ।
একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারের কাজ হলঃ
- সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ম্যানেজ করা
- পেইড মার্কেটিং বা ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা
- নিয়মিত পোস্ট করা ও প্রচার করা
- নিয়মিত কন্টেন্ট লিখা
- গ্রাহকদের যেকোন প্রশ্নের উত্তর দেয়া
শেখার সময়ঃ
আপনি যদি নিয়মিত সময় দিতে পারেন, তাহলে আপনি ৪-৬ মাসের মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট শিখতে পারেন।
আয়ের সম্ভাবনাঃ
একজন দক্ষ সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা ইনকাম করে থাকে। অনেকে মাসে লক্ষ টাকা পর্যন্তও আয় করে।
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট শেখার জন্য এই কোর্সগুলো দেখতে পারেন-
৮. ইউএক্স / ইউ আই ডিজাইনার (UI /UX Designer)
UI/UX যার পূর্ণরূপ User Interface এবং User experience। ইউআই হল ব্যবহারকারীর ইন্টারফেস, যা ব্যবহারকারীদের একটি পণ্য বা পরিষেবা ব্যবহার করার সময় দেখতে এবং কীভাবে এটি ব্যবহার করতে হয় তা বোঝার জন্য ব্যবহৃত হয়।
ইউএক্স হল ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা, যা ব্যবহারকারীরা একটি পণ্য বা পরিষেবা ব্যবহার করার সময় কেমন অভিজ্ঞতা পাবে এই ডিজাইনটিই UX ডিজাইন।
আয়ের সম্ভাবনাঃ
Upwork এ ফ্রিল্যান্স UX ও UI ডিজাইনারদের প্রতি ঘন্টায় আয় সাধারণত ২০-৪০ ডলারের মধ্যে থাকে।
ইউ আই/ইউএক্স ডিজাইনের কাজগুলো হল-
- রিসার্চ এবং অ্যানালিসিস
- ইউজার স্টোরিজ তৈরি করা
- ইউজার ফ্লো ডিজাইন করা
- ইন্টারফেস ডিজাইন করা
- প্রোটোটাইপিং এবং পরীক্ষা করা
ইউ আই/ইউ এক্স ডিজাইনে প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার:
শেখার সময়ঃ
UX ও UI ডিজাইনার হওয়ার জন্য কোন টুলের কি কাজ সেটা শিখতে ২-৩ মাস সময় লাগতে পারে। পরে টুলগুলো দিয়ে সুন্দর ডিজাইন করতে আর ৪ থেকে ৫ মাস সময় লাগতে পারে। একজন ভালো UX ও UI ডিজাইনার হওয়ার জন্য আপনার ১-৩ বছর পর্যন্ত সময় লেগে যাবে।
ইউএক্স / ইউআই ডিজাইন শেখার জন্য এই রিসোর্সগুলো দেখতে পারেন-
- UI/UX Design ইন্ডাস্ট্রি উপযোগী ক্যারিয়ারের নাম
- সবচেয়ে সহজ ভাবে UI & UX ডিজাইন শিখুন
- UI/UX Design Roadmap
- Best Roadmap to UI/UX Design Career in 2023: A Step-by-Step Guide
৯. ওয়েবসাইট ডিজাইন (Website design)
এখন প্রতিটি কোম্পানি তাদের ব্যবসার জন্য ওয়েবসাইট তৈরি করে থাকে। তাই ওয়েবসাইট ডিজাইনারদের চাহিদাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এবং সেজন্যই ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরেও এর চাহিদা ব্যাপক।
শেখার সময়ঃ
একজন ওয়েবসাইট ডিজাইনার হতে চাইলে আপনার ১-২ বছর লাগতে পারে। আপনি যদি প্রতিদিন ৬+ ঘন্টা সময় দেন তবে ১ বছরের মধ্যে শিখতে পারবেন।
আয়ের সম্ভাবনাঃ
Upwork এ ওয়েবসাইট ডিজাইনারদের আয় প্রতি ঘন্টায় সাধারণত ১৫-৩০ মার্কিন ডলারের মধ্যে থাকে। তবে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা ভেদে আরো বেশি হতে পারে।
ওয়েবসাইট ডিজাইনের জন্য যে ভাষাগুলো শিখতে হয়-
- HTML (HyperText Markup Language)
- CSS (Cascading Style Sheets)
- JavaScript
- JavaScript Frame (Angular JS, jQuery etc.)
- Bootstrap
- Figma
ওয়েবসাইট ডিজাইন শেখার জন্য এই কোর্সগুলো দেখতে পারেন-
- 10 Minutes School Web Design Course
- Programming Hero Web Design and Develoment
- Flux Academy Web Design 101
১০. ওয়েব ডেভেলপমেন্ট (Web development)
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট হলো ওয়েবসাইট তৈরি এবং এর কার্যকারিতা ও ব্যবহারযোগ্যতা উন্নত করার প্রক্রিয়া। এতে থাকে ওয়েবসাইটের ডিজাইন, কোডিং, ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট, সার্ভার কনফিগারেশন এবং অন্যান্য প্রযুক্তিগত কাজ।
শেখার সময়ঃ
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখতে আপনার ১ বছর মত সময় লাগতে পারে। আর একজন এক্সপার্ট হতে আপনার ২-৩ বছরের মত সময় লাগবে।
আয়ের সম্ভাবনাঃ
একজন ওয়েব ডেভেলপারের আয় সাধারণত প্রতি ঘন্টায় $20 থেকে $80 এর মধ্যে হয়ে থাকে। আর একজন বাংলাদেশে ওয়েব ডেভেলপারের বেতন দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে সাধারণত প্রতি মাসে ২০,০০০ থেকে ৭০,০০০ এর মধ্যে হয়ে থাকে।
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখতে হলে যা জানা দরকার-
- HTML
- CSS
- JavaScript
- JQuery
- Bootstrap
- Python or Ruby or other programming language
- SQL
ওয়েব ডেভেলপমেন্টের বিভিন্ন ক্ষেত্র রয়েছে, যেমন:
- ফ্রন্ট-এন্ড ডেভেলপমেন্ট
- ব্যাক-এন্ড ডেভেলপমেন্ট
- ডেটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম
ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট শেখার জন্য এই কোর্সগুলো দেখতে পারেন-
- Web Development Full Free Course
- FreeCodeCamp Full Stack Web Development for Beginners
- Learn Full Stack Web Development From Scratch
সেরা ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মের সমূহ
ফ্রিল্যান্সিং কাজের জন্য বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস রয়েছে যেখান থেকে আপনি কাজ পেতে পারেন।
- আপওয়ার্ক (Upwork)
- ফাইভার (Fiverr)
- ফ্রিল্যান্সিং.কম (Freelancing.com)
- গুরু (Guru)
- পিপল পার আওয়ার (People Per Hour)
- টপটাল (Toptal)
- লিঙ্কেডিন (Linkedin)
- বিল্যান্সার (Balancer)
ফ্রিল্যান্সিং এ কোন কাজ শিখা আপনার জন্য ভালো?
ফ্রিল্যান্সিং এ কোন কাজ শিখবেন এটি নির্ভর করে আপনার স্বাভাবিক দক্ষতা এবং আগ্রহের উপর। প্রতিটা সেক্টরেই আপনি ভালো করতে পারবেন যদি সেটার উপর আপনি যথেষ্ট জানেন ও কাজ করেন।
পাশাপাশি আপনার নিজের ল্যাপটপ আছে কিনা বা মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করতে চান কিনা এটাও গুরুত্বপূর্ণ।
সাথে বিবেচনায় রাখুন আপনার বর্তমান আর্থিক অবস্থা ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা।
ফ্রিল্যান্সিং কাজের জন্য কি কি প্রয়োজন?
- কাজ শেখা ও করার জন্য আলাদা রুটিন তৈরি
- কাজ করার মত পরিবেশ, ভিডিও কলে কথা বলার মত পরিবেশ
- ভালো মানের ল্যাপটপ। তা না থাকলে ভালো মোবাইল দিয়ে আপাতত শুরু করতে পারেন।
- উপরোক্ত যেকোন ১টি বিষয়ে দক্ষতা অর্জন
- ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা অর্জন
- যে দক্ষতা শিখেছেন তার উপর তৈরি করা পোর্টফোলিও
- নিজের সকল তথ্য সম্বলিত প্রফেশনাল সিভি
- বিভিন্ন জব সাইট ও ফ্রিল্যান্সিং সাইটে একাউন্ট
- ব্যাংক একাউন্ট
- পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং ও প্রচার
- নিয়মিত জব এপ্লিকেশন
উপরোক্ত বিষয়গুলোর বিস্তারিত পাবেনন এই আর্টিকেলে – ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো।
শেষ কথা
ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ যত দ্রুত শেখা শুরু করবেন তত দ্রুত লাভবান হবেন।, তাই আজই শুরু করুন। আপনার পছন্দের বিষয় নির্বাচন করুন এবং নিয়মিত শিখে যান। তাহলেই আপনি ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল হতে পারবেন।
Author
মুরাদ খান (Murad Khan) এর ছোটবেলা থেকেই প্রযুক্তির প্রতি আলাদা আগ্রহ আছে। প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে মানুষের জীবনে ভালো পরিবর্তন আনার জন্য কাজ করতে ভালোবাসেন। । কর্মজীবন শুরু করেন ফ্রিল্যান্সিং দিয়ে, পরে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে যোগ দেন। নিজের চেষ্টায় অর্জন করেছেন ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিভিন্ন দক্ষতা। কাজ করছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ প্রযুক্তি নিয়ে আগ্রহী মানুষের জীবন মান উন্নয়নে। এই লক্ষ্যেই বিডি আইসিটি ক্লাবের প্রতিষ্ঠা।