fbpx

সেরা ২৩টি লক্ষ্য নিয়ে উক্তি ও সেসবের ব্যাখ্যা

ভাবছেন জীবনের লক্ষ্য কি হওয়া উচিত? লক্ষ্য ঠিক করতে মুশকিল হচ্ছে কী? কোনো অসুবিধা নেই! এই আর্টিকেলে জীবন বদলে দেয়া কিছু লক্ষ্য নিয়ে উক্তি পাবেন, একবার চোখ বুলিয়ে নিন, কে জানে হয়তো এখনই একটি দুর্দান্ত দিক নির্দেশনা পেয়ে যাবেন!

একটা কথা তো অবশ্যই জেনে থাকবেন যে লক্ষ্য ছাড়া কাজ আপনি যতই করে যান, তৃপ্ত হবেন না। আসুন তাহলে দেখে নেই, লক্ষ্য নিয়ে বিশ্ব সেরা উক্তিগুলো এখানেই।

লক্ষ্য কী নিয়ে উক্তি

১. “লক্ষ্য হল সময়সীমা সহ স্বপ্ন।” – নেপোলিয়ন হিল

এই উক্তির মাধ্যমে আমরা জানতে পারি যে লক্ষ্য হলো এমন এক বিষয় যা পূরণ হলে স্বপ্ন পূরণের আনন্দ মেলে। আর হ্যা যেকোনো লক্ষ্য অর্জনের ব্যাপারটি একটি সময়কেন্দ্রিক হতে হবে। আমি যা চাই তা যেন একটি সময়ের সীমার মাঝে সম্পন্ন করতে পারি। লক্ষ্য মূলত এটাই। এই সময়ের প্রসঙ্গটি না থাকলে দেখা যাবে স্বপ্ন পূরণে কোনো তাগাদা আসছে না, এর ফলে কালক্ষেপন হয়ে গেলে হতাশা চলে আসবে।

২. “লক্ষ্য চুম্বকের মতো। তারা সেই জিনিসগুলিকে আকর্ষণ করবে যা তাদের সত্য করে তোলে।” – টনি রবিন্স

এই উক্তি থেকে আমরা জানতে পারছি যে লক্ষ্য এবং লক্ষ্য ধারণকারীর মধ্যে দারুন এক সম্পর্ক থাকে। লক্ষ্য যেন চুম্বকের মতো আকর্ষণ করে তাকেই যে সেই লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে পারবে। অর্থাৎ, লক্ষ্য যেন এক সম্মোহনী শক্তি।

৩. “ঘড়ি দেখো না; এটি যা করে তা করুন। চলতে থাকা.” – স্যাম লেভেনসন

লক্ষ্য সম্পর্কে খুবই বাস্তবিক একটি সংজ্ঞা হচ্ছে স্যাম লেভেনসনের এই উক্তিটি। যে জীবনের লক্ষ্য হচ্ছে চলতে থাকা। থেমে না যাওয়া। কেউ যদি কোনো কারণে পথ চলতেই থেমে যায়, তাহলে হয়তো সে জানবেওনা যে তার গন্তব্য হয়তো পরের মুহূর্তেই ছিল! উদাহরণ হিসেবে ঘড়ির কথাটি চমৎকার ভাবে মিলে যায়। ঘড়ি যেভাবে তার কাজ করে যায় – ঘড়ির কাঁটা যেমন সময় দেখাতেই থাকে, আমাদেরও উচিত থেমে না থেকে কাজ করে যাওয়া। সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া। এটিই জীবনের লক্ষ্য হওয়া উচিত। সামনের দিকে আগালে বা কাজ করে গেলেই জানা যাবে কোথায় সুযোগ অপেক্ষা করছে নিজের যোগ্যতা প্রমানের।

৪. “একটি পরিপূর্ণ জীবন যাপন করার জন্য, আমাদের জীবনের “পরবর্তী কী” তৈরি করতে হবে। স্বপ্ন এবং লক্ষ্য ছাড়া কোন জীবন নেই” – মার্ক টোয়েন

জীবনের লক্ষ্য কি এটা আমরা অনেকেই খুঁজি আর তার উত্তর সম্পূর্ণরূপে পাওয়া যায় মার্ক টোয়েনের এই উক্তিতে। এখানে বলা হয়েছে লক্ষ্য হচ্ছে ভবিষ্যতে যা আমরা অর্জন করতে চাই বা যেখানে পৌঁছাতে চাই। আরো বলা হয়েছে, এই উদ্দেশ্য ঠিক না করলে জীবন কারোই পরিপূর্ণ হয়না। সুতরাং, একটি পূর্ণ জীবন যাপনের জন্য জানতে হয় যে আমি কী করতে চাই। এটার সবচেয়ে ভালো দিক হলো জীবনে যে যতটুকু আয়ুই পেয়ে থাকুক, সেটার সঠিক ব্যবহার হয়।

৫. “আমার লক্ষ্য কান্নার চেয়ে বেশি হাসি ছড়িয়ে দেওয়া।” – টুপাক শাকুর

উপরোক্ত উক্তিতে জীবনের লক্ষ্য নিয়ে সুন্দর একটি কথা বলা হয়েছে। সেটা হচ্ছে, জীবনের লক্ষ্য হওয়া উচিত আনন্দ বিলানো। অন্যের জীবনে হাসি আর আনন্দের কারণ যত বেশি হওয়া যায় আসলে ততই চারপাশের মানুষগুলো ভালো থাকবে। মানুষের জীবনের সকল কাজ ও প্রচেষ্টার উদ্দেশ্যই তো ভালো থাকা!

লক্ষ্য কেমন হওয়া উচিত নিয়ে উক্তি

৬. “সঠিকভাবে সেট করা একটি লক্ষ্য অর্ধেক হয়ে গেছে।” – জিগ জিগলার

এই কথাটি চমৎকার! বলা হচ্ছে কেউ যদি সঠিক লক্ষ্য স্থির করতে পারে, সেটি অর্ধেকই পূরণ হয়ে যায়! আচ্ছা, মূল কথা হলো, লক্ষ্য আসলে আপনা আপনি পূরণ হবে না, যেটা হবে তা হলো – অনেক চিন্তা ভাবনা করে, নিজের যোগ্যতার সাথে মিল রেখে লক্ষ্য স্থির করার সাথে সাথেই সেটা অর্জন বা পূরণ করার উপায় নিয়েও মানুষ দিক নির্দেশনা পেয়ে যায়। জীবনের লক্ষ্য কি হবে এ নিয়ে যখন আপনি ভাববেন, সেটি অর্জন করার মতো সামর্থ আছে কিনা সেটিও ঠিক পরেই আপনি ভেবে থাকবেন। “কিভাবে নিজের লক্ষ্যে পৌঁছাবেন?” এই প্রশ্ন নিজের মাঝে আসলে উত্তরও পেয়ে যাবেন।

৭. “আপনার লক্ষ্যগুলি উচ্চ সেট করুন এবং আপনি সেখানে না যাওয়া পর্যন্ত থামবেন না।” – বো জ্যাকসন

আমাদের উচিত জীবনের লক্ষ্য এমন ভাবে স্থির করতে হবে যেন যেটা অর্জন করার জন্য পরিশ্রম ও মেধা খরচ করতে হয়। আর অবশ্যই লক্ষ্য এমন হওয়া উচিত যেন কখনো সেটা পূরণ হওয়ার আগে হার না মানি। লক্ষ্য যদি খুব সহজসাধ্য হয়ে থাকে তাহলে দেখা যাবে সেটা অর্জন করার জন্য খুব আগ্রহ থাকবে না কারণ মনে হবে একটু চেষ্টা করলেই পারবো! তাই বলা হয়েছে যে লক্ষ্য যেন হয় এমন যার জন্য নিজের যোগ্যতা বাড়ানোর প্রয়োজন হয়।

৮. “একটি স্বপ্ন একটি লক্ষ্য হয়ে ওঠে যখন তার অর্জনের দিকে পদক্ষেপ নেওয়া হয়।” – বো বেনেট

আমাদের কতইনা স্বপ্ন থাকে জীবন নিয়ে, কিন্তু অবচেতন মনে আমরা ধরেই নেই যে, স্বপ্ন হলো শুধু কল্পনার জগৎ যেখানে বাস্তবতা নেই। কিন্তু স্বপ্ন পূরণের জন্য যদি আমরা শক্ত মনোবল তৈরী করি তখন সেটাই কিন্তু একটা লক্ষ্য হয়ে যায় জীবনের! এখান থেকে আমরা বুঝতে পারি যে বিভিন্ন বিখ্যাত মানুষজন এই একটি ব্যাপারে কতটা গুরুত্ব দিয়েছেন! শুধু লক্ষ্য নির্ধারণ করাই যথেষ্ট নয়! লক্ষ্য নির্ধারণ যেন অর্জনের জন্যই হয়ে থাকে।

৯. “আপনার লক্ষ্যগুলি হল রোডম্যাপ যা আপনাকে গাইড করে এবং আপনার জীবনের জন্য কী সম্ভব তা দেখায়।” – লেস ব্রাউন

এই উক্তি থেকে আমরা জানতে পারি যে লক্ষ্য যেন এমনভাবে ঠিক করা হয় যেটা আমাকে বলে দিবে যে পরবর্তী পদক্ষেপ আমার কী হবে। জীবনের লক্ষ্যই যেন বলে দেয় যে কেন আমি এই লক্ষ্য স্থির করেছি।

১০. “লক্ষ্যের মাঝখানে জীবন নামক একটি জিনিস যাকে বাঁচতে এবং উপভোগ করতে হয়।” – সিড সিজার

বাকি সমস্ত লক্ষ্য নিয়ে উক্তি থেকে এই উক্তিটি আলাদা এই কারণে যে এটি বলেছে যে লক্ষ্য স্থির করা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু খুব বেশি সেই লক্ষ্য অর্জনে ব্যস্ত হয়ে থাকলে দেখা যাবে যে আমরা জীবনকেই জটিল করে তুলেছি। অনেক সময় এমন হয় যে, কেউ কোনো লক্ষ্যে না পৌঁছানো পর্যন্ত জীবনে কোনো আনন্দে অংশগ্রহণ করবে না। এদিকে লক্ষ্য অর্জন যদি দেরি করে হয়, একজন মানুষ ততদিন পর্যন্ত যদি নিজেকে আনন্দ ও জীবনের উদযাপন থেকে বঞ্চিত করে তবে তা একসময় তাকে হতাশাগ্রস্ত করে তোলবে।

১১. “আপনার সময় সীমিত, অন্যের জীবন যাপনের জন্য এটিকে নষ্ট করবেন না।” – স্টিভ জবস

স্টিভ জবসের যুগান্তকারী এই উক্তিটি যেকোনো মানুষকে সঠিক লক্ষ্য নির্ধারণে সাহায্য করবে। তিনি বলেছিলেন লক্ষ্য যেন কখনোই অন্য যা আশা করে সেরকম কিছু না হয়! আমাদের প্রত্যেকেরই স্বপ্ন, আশা, লক্ষ্য বা ইচ্ছায় বৈচিত্র থাকে কিন্তু আমরা “লোকে কি বোলবে” সেটা এত ভাবি যে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি অন্যের দৃষ্টিতে সফল হওয়ার জন্য! উনি বলেছেন এই ভুল যেন আমরা কখনোই না করি।

লক্ষ্যে স্থির থাকা নিয়ে উক্তি

১২. যারা শুদ্ধ বিশ্বাস নিয়ে সামনে এগিয়ে যায়, তারা একদিন সবকিছুই ঠিক হতে দেখে” – গর্ডন হিংকলি

লক্ষ্য শুধু ঠিক করলেই তো হয়না, তার উপর আস্থা রেখে এগিয়ে যেতে হয়। আর এখানেই রয়েছে একটা চ্যালেঞ্জ! অনেকেই প্রতিকূলতায় ঘাবড়ে যায় আর তখন লক্ষ্যে স্থির থাকতে পারেনা। নিজের স্থির করা লক্ষ্য নিয়ে যদি নিজেই দ্বিধায় পরে যায় তাহলে কিন্তু সমস্যা। আর তাই যারা সম্পূর্ণ বিশ্বাস নিয়ে সততার সাথে লক্ষ্য পূরণে আগাতে থাকে, তারাই এক সময় পৌঁছায়।

১৩. জলের দিকে শুধু তাকিয়েই থাকলে তুমি কোনদিনই সাগর পাড়ি দিতে পারবে না। – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনের লক্ষ্য নিয়ে উক্তিটি ভীষণভাবেই নাড়া দিয়ে যায় যেন পাঠকদের। তিনি যা বুঝিয়েছেন তা হলো, লক্ষ্য স্থির করে সেখানেই যদি কেউ থেমে যায় পথ কঠিন বলে, তাহলে আর কখনোই লক্ষ্যে পৌঁছানো হবেনা। বরং, কঠিন পথ জেনেও সাহস করে একটু একটু করে এগিয়ে গেলেই এক সময় অনেক দূর যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

১৪. লক্ষ্যবিহীন জীবন ব্যর্থতাই আনে। নদী যেমন সাগরের দিকে নানাভাবে নানাগতিতে চলিয়াও শেষে সাগরে মেশে, তেমনি বিধাতার আদেশ শিরে রাখিয়া সংসারে কন্টকপথে স্থির লক্ষ্যে চলিবে। – জরথুস্ত্র

লক্ষ্যে স্থির থাকা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। এর একটা কারণ হচ্ছে, ভবিষ্যৎ সর্বদাই অনিশ্চিত। আর এই অনিশ্চয়তা কখনো ভীতিকর হয়ে যায়। জীবনের লক্ষ্য অর্জনের উপায় ও পথ সবসময় সুবিধাজনক নাও হতে পারে। কিন্তু হার মানলে চলবে না। আর এই পথে রয়েছে অনেক চড়াই উৎরাই – এটা মেনেই সৃষ্টিকর্তার উপর ভরসা করে কাজ করে যেতে হবে লক্ষ্য অর্জনে।

লক্ষ্যের গুরত্ব নিয়ে উক্তি

১৫. “অন্য লক্ষ্য স্থির করার বা একটি নতুন স্বপ্ন দেখার জন্য আপনি কখনই খুব বেশি বয়সী নন।” – সিএস লুইস

জীবনে লক্ষ্যের গুরুত্ব এত বেশি যে সেটা স্থির করার কোনো নির্দিষ্ট বয়স নেই। জীবনের যে সময়েই আপনার মনে হবে আপনার একটা লক্ষ্য অর্জন করার মতো ইচ্ছাশক্তি আছে, তখনি আপনি সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে পারেন। এখানে কোনো বাধা নেই, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরির জন্য যেমন থাকে বয়সের সময়সীমা। জীবন আপনার, লক্ষ্য ও আপনার, আর আপনিই এর হর্তা কর্তা।

১৬. “আপনি যে শটগুলি নেন না তার 100% মিস করেন।” – ওয়েন গ্রেটস্কি

কি যে চমৎকার এই কথাটি একবার ভেবে দেখুন! হয়তো আপনি ভাবছেন আপনাকে দিয়ে ব্যবসায় হবেনা কারণ আপনি মনে করছেন এত ব্যবসায়ী আছে চতুর্দিকে, তার মাঝে কেউই আপনার কাছে আসবেনা নতুন করে ক্রেতা হতে। এখন যদি চেষ্টাই না করেন তাহলে বুঝতেও পারবেন না যে হয়তো আপনার আন্তরিক ব্যবহারের কারণে ব্যবসায়ী হিসেবে আপনার প্রচার ও লাভ দুটোই হতো অনেক বেশি, অন্যদের চেয়েও! তাই বলা হয়েছে যে চেষ্টা আমরা করিনা, সেখানে ব্যর্থতা শতভাগই!

১৭. যদি কোনো লক্ষ্য অর্জন করা অসম্ভব বলে মনে হয় তবে তোমার লক্ষ্য বদলিও না। দরকার হলে কৌশল বদলে দেও। – কনফুসিয়াস

কখনো যদি লক্ষ্য অর্জন অনেক কঠিন মনে হয়, হতাশাগ্রস্ত হবেন না। প্রয়োজনে একটু ভাবুন যে ভিন্ন পথে আগালে লক্ষ্য অর্জন সহজ হবে কিনা। লক্ষ্য একটু কঠিন হোক, অর্জনে ক্লান্তি আসুক, বিশ্রাম হোক কিন্তু “আমাকে দিয়ে হবেনা” ভেবে হার মেনে নেয়া উচিত না।

১৮. লক্ষ্যপথ জানা থাকলে মানুষের স্বভাবে থাকে স্থিরতা। কারণ লক্ষ্যহীন জীবন চঞ্চল, ধৈর্যহীন, উদভ্রান্ত। – খন্দকার মােঃ ইলিয়াস

এই উক্তিতে আমরা দেখতে পাই যে যে জীবনের লক্ষ্য স্থির করতে পেরেছে সে অন্যদের থেকে একটা সুবিধাজনক অবস্থানে আছে। সে জানে তার কি চাই জীবনে। এই অনুভুতিটা অনেক বড় কারণ যে জানে সে কি চায় জীবনে, তার জন্যে প্রতিটা দিন হয় অলসতা, দ্বিধা আর দুশ্চিন্তাবিহীন। যে এখনো লক্ষ্য স্থির করেনি তার কাছে জীবন কষ্টকর কারণ সে থাকে একটা অস্থিরতায় এবং মূল্যবান সময় চলে যায় কোনো উল্লেখযোগ্য কাজ ছাড়া।

১৯. লক্ষ্যে পৌঁছানাের চেষ্টাতেই গৌরব নিহিত, লক্ষ্যে পৌছানােতে নয়। – মহাত্মা গান্ধী

মহাত্মা গান্ধীর লক্ষ্য নিয়ে অনুপ্রেরণামূলক উক্তিটি আমাদের একটা ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে জীবন দেখায়। এখানে আমরা দেখতে পাই যে লক্ষ্য স্থির করে সেখানে পৌঁছানোর চেয়ে পৌঁছানোর চেষ্টার মাঝেই সার্থকতা ও মর্যাদা আছে। প্রশ্ন আসতে পারে, কেন এমন বলা হলো। কারণ হিসেবে বলা যায়, লক্ষ্যে হয়তো সবাই চাওয়া মাত্র নাও পৌঁছাতে পারে, কারণ ভবিষ্যৎ সর্বদাই অনিশ্চিত। অপরদিকে কেউ যদি লক্ষে পৌঁছানোর চেষ্টাই না করে তাহলে তো লক্ষ্য অর্জনের সম্ভাবনাও থাকবে না।

২০. “জীবনের লক্ষ্য না থাকার সবচেয়ে বড় সমস্যাটি হল, তুমি সারা জীবন মাঠের ভেতরে দৌড়েও গোল দিতে পারবে না” – বিল কোপল্যান্ড

জীবনের লক্ষ্য অর্জন নিয়ে বিখ্যাত উক্তির মধ্যে এই উক্তিটি অন্যতম সেরা! খেয়াল করুন, অনেক মানুষ সারাজীবন কাজ করেও দিন শেষে সুখী হতে পারেনা! কারণ শুধু কাজ করে গেলে শক্তি ও মেধা খরচ হয়, ক্লান্তি আসে কিন্তু পূর্ণতা আসে না। আর তাই আমাদের এই সীমিত জীবনের কাজগুলো ও মেধা ও পরিশ্রমের যেন যথোপযুক্ত ব্যবহার হয় সেজন্যেই উচিত সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অনুযায়ী কাজ করা।

লক্ষ্য নির্ধারণ করার উপায় নিয়ে উক্তি

২১. “যদি সুখী হতে চাও, তবে এমন একটি লক্ষ্য ঠিক করো, যা তোমার বুদ্ধি আর শক্তিকে জাগ্রত করে, এবং তোমার মাঝে আশা আর অনুপ্রেরণা সৃষ্টি করে” – এ্যান্ড্রু কার্নেগী

লক্ষ্য নির্ধারণ করার উপায় নিয়ে খুব সুন্দর একটি বার্তা দিয়ে যাচ্ছে উপরোক্ত উক্তিটি। সত্যিই, লক্ষ্য হবে এমন যেটা একজন মানুষকে উজ্জীবিত করবে, আগ্রহী করবে জীবন সম্পর্কে আর তারবুদ্ধি ও যোগ্যতার সর্বোচ্চ ব্যবহার করবে। কখনো যদি মনে হয় ভুল হয়ে গেছে লক্ষ্য নির্ধারণে, আবারো শুরু থেকে চিন্তা করে সেটি নির্ধারণ করা যাবে।

২২. পৃথিবীতে যারাই বিশাল অর্জন করেছে, তাদের সবারই একটি বিশাল লক্ষ্য ছিল। তাদের চোখ ছিল এমন লক্ষ্যের দিকে – যার অবস্থান অনেক উঁচুতে; এমন লক্ষ্য যাকে ছুঁতে পারা অসম্ভব বলে মনে হত” – অরিসন মার্ডেন

কেউ যদি কখনো লক্ষ্য নির্ধারণ নিয়ে দ্বিধায় থাকে তার জন্য উপরোক্ত উক্তিটি একটি আদর্শ দিক নির্দেশক। লক্ষ্য অবশ্যই হতে হবে এমন কিছু যেটি সাধারণ কাজ থেকে উচ্চতর। কারণ জীবনটা তখনি সার্থক হয় যখন অসম্ভব মনে হওয়া কোনো কাজ করা সম্ভব হয়। সেটি বলার মতো একটি দৃষ্টান্ত হিসেবে উপস্থাপন করা যায়।

২৩. “গ্রেট হতে হলে তোমাকে এমন লক্ষ্য ঠিক করতে হবে, যা তোমার সাধ্যের বাইরে। তোমার লক্ষ্য যদি খুব বেশি চিন্তা ও পরিশ্রম ছাড়া অর্জন করা সম্ভব হয়, তবে তুমি তোমার সত্যিকার প্রতিভা ও ক্ষমতাকে কাজে লাগাওনি” – স্টিভ গ্রেভি

জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা প্রসঙ্গে এই উক্তিটিও একই কথা বলছে। লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে এমন কিছু যা অনেক চিন্তা ভাবনার ফলপ্রসূত হবে। সহজেই করা যায় এমন কিছু না। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে কাজ বা লক্ষ্য কঠিন না হলে একজন মানুষ তার পূর্ণ প্রতিভাকে কাজে লাগানোর সুযোগ পায়না।

শেষ কথা

আশা করছি, জীবনের লক্ষ্য নিয়ে বিখ্যাত মানুষের উক্তিগুলো ও তার ব্যাখ্যা আপনার জীবনে সঠিক লক্ষ্য নির্ধারণ ও সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করবে। আপনার সুন্দর ও সার্থক জীবনের প্রত্যাশায় আজ এখানেই ইতি টানছি। লক্ষ্য নির্ধারণ নিয়ে কিছু জানতে চাইলে বা জানাতে চাইলে আপনার মন্তব্যের অপেক্ষায় থাকবে আমাদের টীম।

Author

মুরাদ খান (Murad Khan) এর ছোটবেলা থেকেই প্রযুক্তির প্রতি আলাদা আগ্রহ আছে। প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে মানুষের জীবনে ভালো পরিবর্তন আনার জন্য কাজ করতে ভালোবাসেন। । কর্মজীবন শুরু করেন ফ্রিল্যান্সিং দিয়ে, পরে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে যোগ দেন। নিজের চেষ্টায় অর্জন করেছেন ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিভিন্ন দক্ষতা। কাজ করছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ প্রযুক্তি নিয়ে আগ্রহী মানুষের জীবন মান উন্নয়নে। এই লক্ষ্যেই বিডি আইসিটি ক্লাবের প্রতিষ্ঠা।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!