বর্তমানে পৃথিবীতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতাগুলো সম্পর্কে বলতে গেলে প্রথমেই আসবে যোগাযোগ দক্ষতা বা কমিউনিকেশন স্কিলের নাম। ব্যক্তিগত, সামাজিক বা পেশাগত জীবনে কমিউনিকেশনে এক্সপার্ট বা যোগাযোগ ক্ষেত্রে দক্ষ হওয়ার বিকল্প নেই। আর এই দক্ষতা রপ্ত করার ক্ষেত্রে কোনো সীমারেখা নেই। আপনি প্রতিনিয়ত নতুন টেকনিক প্রয়োগ করা শিখতে পারেন যা আপনাকে আরো পরিণত মানুষ হিসেবে সবার সামনে উপস্থাপিত করবে।
এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনি শিখবেন যোগাযোগ দক্ষতা গড়ে তোলার সেরা ১১টি টিপস। পাশাপাশি সেরা কিছু কোর্স ও বইয়ের রিভিউও পাবেন যা আপনার দক্ষতাকে আরো শাণিত করবে।
যোগাযোগ দক্ষতার গুরুত্ব
যোগাযোগ হল তথ্য বা বার্তা পাঠানো ও গ্রহণ করার প্রক্রিয়া। অপরদিকে যোগাযোগ দক্ষতা হল নিজেকে অন্যের কাছে সঠিকভাবে উপস্থাপন, পূর্ণাঙ্গভাবে যেকোনো তথ্য জানানো এবং অন্যের কথা বুঝতে পারা।
জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই এই দক্ষতা আবশ্যক, হোক সেটি একান্ত ব্যক্তিগত বা পেশাগত। ক্যারিয়ারে উন্নতির জন্য অন্য সব দক্ষতার সমন্বয় ঘটাতে যোগাযোগ দক্ষতার বিকল্প নেই। শুধুমাত্র একজন প্রতিষ্ঠিত মানুষ হিসেবে নয়, একজন উদার ও হাসিখুশি মানুষ হিসেবে সমাজে পরিচিতি পেতে প্রয়োজন সবার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা।
কিভাবে হয়ে উঠব কমিউনিকেশন এক্সপার্ট
অনেকেই মনে করে থাকেন কমিউনিকেশন এক্সপার্ট হওয়ার জন্য আলাদা করে কোনো চর্চার প্রয়োজন নেই। অথচ এটি প্রতিনিয়ত চর্চা না করলে রপ্ত করা সম্ভব না । কেননা, এই দক্ষতাটির ধরণ নিয়মিত আপডেট হচ্ছে । একেক সময় একেক জনের সাথে আলাদা আলাদা টুলস প্রয়োগ করে নিজের দক্ষতার পরিচয় রাখতে হয়। পরিস্থিতি ও প্রয়োজনবোধে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে নিজেকে আরো বেশি বহির্মুখী করে রাখতে হয়। নতুন করে শেখা এবং নিয়মিত চর্চার মাধ্যমে নিজেকে কমিউনিকেশন এক্সপার্ট হিসেবে গড়ে তুলতে হয়।
এবার তবে জেনে নেয়া যাক যোগাযোগে দক্ষ হওয়ার ১১ টি সেরা পদ্ধতি-
১. জানতে হবে নিজেকে
যোগাযোগ দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রথমেই জেনে নিতে হবে আপনি ঠিক কি কি জানেন আপনার কি করতে ভালো লাগে, কি ধরণের মানুষের সাথে থাকতে ভালো লাগে, আপনার দক্ষতার পরিসরই বা কতোটুকু।
আপনি হয়তো পরিচিত সবার সাথে সহজে কথা বলতে পারলেও অপরিচিতদের সাথে কথা বলতে বেশ ইতস্তত বোধ করেন কিংবা প্রয়োজনের তুলনায় বেশি কথা বলেন। আবার যোগাযোগের অন্যান্য মাধ্যম ব্যবহারে হয়তো বেশ অপটু। এই যে আপনার অপারগতা বা অদক্ষতা রয়েছে, তা নিয়ে ভাবলে সহজেই পথ খুঁজে পাবেন। তাই যৌক্তিক ও কার্যকরী উদ্যোগ নেয়ার ক্ষেত্রে আগে নিজেকে জানা জরুরী।
২. হওয়া চাই আত্মবিশ্বাসী
যোগাযোগে দক্ষতা অর্জনের পূর্বশর্ত হচ্ছে আত্মবিশ্বাসী হওয়া। কেননা আপনি যখন কাউকে কথা বা কাজ দ্বারা প্রভাবিত করতে চাইবেন তখন নিজের কথার প্রতি অটল থাকতে হবে। সকল প্রকার সংকোচ উড়িয়ে দিয়ে আপনাকে সাবলীল ও সহজ আচরণ করতে হবে।
আর আপনি যদি পড়তে পছন্দ করেন, আইডিয়া শেয়ার করতে ভালো লাগে, জানার আগ্রহ বেশি থাকে তবে যে কারো সাথে কথা বলার সময় অধিক আত্মবিশ্বাসী হবেন। এছাড়াও আপনার মধ্যে থাকা গুণাবলীগুলো অন্যকে জানানোর জন্য অবশ্যই বিনাদ্বিধায় নিজেকে প্রকাশ করতে হবে। বিশেষত কর্মক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাসী মনোভাব আপনাকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে।
৩. শ্রবণে ও পর্যবেক্ষনে পারদর্শীতা
ভালো বক্তা হওয়ার আগে আপনাকে অবশ্যই একজন ভালো শ্রোতা হতে হবে। স্বভাবতই মানুষ নিজেকে উপস্থাপন করতে বেশি পছন্দ করে, তাই অন্যকে বলার সুযোগ দিন । অপরপাশের মানুষটির কথা শেষ হওয়ার আগে তাকে থামাবেন না। মনোযোগ দিয়ে শুনে তথ্য সংগ্রহ ও আপনার মতামতের পক্ষে যুক্তি তৈরী করুন।
যদি কোনো সভা-সেমিনারে অন্য বক্তার কথার প্রেক্ষিতে কিছু বলতে হয়, তবে যেকোনো মন্তব্য করার আগে অবশ্যই সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করুন। এমনকি কর্মক্ষেত্রে অন্যান্য সহকর্মীদের চিন্তাধারা, ভাবভঙ্গি, মতাদর্শ সম্পর্কে অবগত হলেই আলাদাভাবে যোগাযোগ স্থাপন করাটা সহজ হবে।
যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ অভিমত দেয়ার আগে অবশ্যই ভালো করে শুনুন এবং বুঝুন। এক্ষেত্রে টিভিতে বিভিন্ন টকশো, অনলাইনে থাকা পডকাস্ট, বিতর্ক প্রভৃতি নিয়মিত শুনতে পারেন যা আপনাকে কথোপকথনে আরো সাবলীল করতে সহায়তা করবে।
৪. যোগাযোগের মাধ্যমগুলোর ভিন্নতা বোঝা
ভাববিনিময়ের মতো যোগাযোগের মাধ্যমেও বেশ ভিন্নতা রয়েছে। মুখে কথা বলার ছাড়াও অন্যকে শোনার ধৈর্য্য, লেখায় শব্দশৈলীর প্রয়োগ, দারুণভাবে নিজেকে উপস্থাপন করা, সুচারুভাবে প্রেজেন্টেশন বানানো প্রভৃতি যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম।
অনেক সময় ইশারা বা অভিব্যক্তির মাধ্যমেও যোগাযোগ করে নিতে হয়। যেমন আপনি কথা বলায় পটু হলেও যেসব জায়গায় যোগাযোগ লিখে করতে হয় (যেমন-ইমেইল, ইনভাইটেশন লেটার, নিউজ লেটার, প্রবন্ধ লেখা প্রভৃতি) সেসব ক্ষেত্রে হয়তো ততোটা দক্ষ না।
মূলত যোগাযোগের ক্ষেত্রে প্রতিটি মাধ্যমের ব্যবহার জানা জরুরী। অর্থাৎ আপনি একটি বা দুইটি মাধ্যমে সফল হলেই নিজেকে দক্ষ দাবি করতে পারবেন না। তাই, আপনাকে প্রতিটি মাধ্যমে সমান পারদর্শী হওয়ার জন্য সচেষ্ট থাকতে হবে।
৫. অঙ্গভঙ্গির সঠিক ব্যবহার
কমিউনিকেশনের ক্ষেত্রে Body Language বা অঙ্গভঙ্গির ব্যবহার খুব প্রয়োজনীয় একটি স্কিল। একজন মানুষের আচরণেই তার ব্যক্তিত্ব ফুটে উঠে। আপনি যা বলছেন তা অন্যকে সঠিকভাবে বোঝানোর জন্য শরীরী ভাষা ব্যবহার আবশ্যক। ধরুন, কেউ আপনার সাথে কথা বলার সময় অন্যমনস্ক হয়ে আছে তখন নিশ্চয় আপনি আর কথা বাড়াতে চাইবেন না।
তাই আপনাকে অবশ্যই অন্যের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে হবে, মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে। এছাড়াও অতিরিক্ত নড়াচড়া না করা, হাতের অবস্থান ঠিক রাখা শালীনতার লক্ষন।
৬. রাখা চাই ইতিবাচক মনোভাব
কারো সাথে যোগাযোগের আগেই যদি তার সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা করে বসেন, তবে যোগাযোগ আর এগোবে না। এজন্য যেকোনো ধরণের যোগাযোগের ক্ষেত্রে আপনার দিক থেকে সবসময় ইতিবাচক মনোভাব রাখতে হবে। ব্যক্তিগত সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমরা অনেক সময় অন্যকে অহংকারী তকমা দিয়ে আর কাছে ঘেষঁতে চাই না। অথচ নমনীয় আচরণে একটি সহজ ও সুন্দর সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে। একইভাবে পেশাগত বিভিন্নকাজে সবার সাথে মিলে ইতিবাচক আচরণ করে সহজেই যেকোনো সমস্যার সমাধান সম্ভব হয়।
৭. শব্দচয়নে দিতে হবে দক্ষতার পরিচয়
দৈনন্দিন জীবনে প্রতিনিয়তই যোগাযোগের খাতিরে আমাদের অর্থবহ শব্দ ব্যবহার করতে হয়। আর আপনার কথার মাধুর্য প্রকাশ পায় আকর্ষনীয় ও বোধগম্য শব্দের সুষ্ঠ ব্যবহারে। অনেক সময় অপ্রাসঙ্গিক শব্দ, (যেমন: হুম, অহ, আ, ঠিক আছে) এগুলো বাক্যের সৌন্দর্য্য নষ্ট করে। তাই এমন শব্দ বাদ দিতে হবে।
একইভাবে যেকোনো ধরণের লেখনীর ক্ষেত্রে চেষ্টা করবেন শব্দের মধ্যে আভিজাত্য বজায় রাখতে। আর অবশ্যই একই শব্দ বারবার ব্যবহার না করে ভিন্নভিন্ন শব্দ ব্যবহার করবেন । এতে আপনার শব্দভান্ডার অন্যের আগ্রহের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। সেক্ষেত্রে জানার আগ্রহ ও শুদ্ধতার চর্চা সবসময় বজায় রাখবেন।
৮. সহশিক্ষামূলক ও সামাজিক কাজে সবার আগে
আপনি যদি একজন শিক্ষার্থী হন এবং আগামীতে নিজের দক্ষতার পরিচয় দিতে চান, তবে পড়াশোনার পাশাপাশি সহশিক্ষামূলক কাজে যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করবেন । পাবলিক স্পিকিং, বিতর্ক, আবৃত্তির চর্চা আপনাকে সঠিক উচ্চারণ ও ভাষার ব্যবহারের ক্ষেত্রে পান্ডিত্য অর্জনে সহায়তা করবে।
একইসাথে গল্প লেখা, রচনা লেখা এমন প্রতিযোগিতা প্রভৃতি আপনার মধ্যে থাকা প্রতিভাকে আরো বিকশিত ও প্রকাশিত করবে। বিভিন্ন ধরণের দলীয় খেলাধুলায় অংশগ্রহনে যোগাযোগ দক্ষতায় অনন্য মাত্রা নিয়ে আসতে সাহায্য করবে। এছাড়া সমাজের উন্নয়নের লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করলে সামাজিক সম্পর্কও মজবুত হবে।
৯. স্পষ্টবাদিতা ও নমনীয়তা থাকুক একসাথে
সঠিক সময়ে উপযুক্ত কথা বলাকে স্পষ্টবাদিতা বলা হয়। কিন্তু অনেকেই স্পষ্টবাদী হতে গিয়ে বেশ শক্তভাবে কথা বলেন, যা অন্যের মনে বিরুপ অবস্থার সৃষ্টি করে। বিশেষত কর্মক্ষেত্রে কাজের চাপ সামলাতে না পেরে অন্যকে দোষারোপ করার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। এতে প্রতিকূল পরিবেশের সৃষ্টি হয়। তাই আপনার আচরণে স্পষ্টবাদিতা ও সত্যতার বহিঃপ্রকাশ থাকা বেশ ভালো। তবে একই সাথে আচরণে নমনীয় হতে হবে। এই সমতা রক্ষা করলে যোগাযোগ দক্ষতা ব্যবহার করে বড়সড় সমস্যা সহজেই সমাধান করা সম্ভবপর হয় এবং সবার সাথে ঐক্য বজায় থাকে।
১০. নেতৃত্বের গুণাবলির সম্মিলিত প্রকাশ
যোগাযোগের ক্ষেত্রে লিডারশিপ বা নেতৃত্বের গুণাবলি বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখে। আপনি একজন মনোযোগী শ্রোতা বা সাধারণ বক্তা হয়ে সবার সাথে মিলেমিশে থাকতে পারলেও যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও সমঝোতার ক্ষেত্রে নেতৃত্ববোধ প্রয়োজন। যেকোনো দলের একজন সদস্যমাত্র না থেকে সার্বিক দায়িত্বভার বহন করার জন্য নেতৃত্বের মনোভাব রাখতে হবে। আপনার মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলি থাকলে অন্যদের সাথে কাজ করাটাও অনেক সহজতর হবে।
১১. সামাজিক অনুষ্টানে অংশগ্রহণ
যোগাযোগ দক্ষতার অন্যতম অংশ হলো “নেটওয়ার্কিং” অর্থাৎ অনেকের সাথে নিয়মিত বা উপলক্ষ্য মেনে যোগাযোগ রাখা। সেক্ষেত্রে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্টানে অংশগ্রহণ, সবার সাথে কুশল বিনিময়ের ফলে পূর্বপরিচিত অনেকের সাথে যেমন সুসম্পর্ক থাকবে তেমনি নতুন অনেকের সাথেই সম্পর্ক গড়ে উঠবে। এতে আপনার যেমন নেটওয়ার্কিং বাড়বে তেমনি সামাজিকতাও রক্ষা হবে। এছাড়াও বন্ধুদের মিলনমেলা, স্কুল-কলেজ-ভার্সিটির পুনর্মিলনি এরকম অনুষ্টানে সরব উপস্থিতি আপনার মনে আনন্দের স্ফুরণ ঘটাবে।
যোগাযোগ দক্ষতা বৃদ্ধিতে কোর্স ও বই
এই ১১টি টিপস এর পাশাপাশি যদি নিজেকে সত্যিকার অর্থেই দক্ষ কমিউনিকেটর হিসেবে গড়ে তোলতে চান তবে নিম্নের কোর্স ও বইটি আপনাকে বিশেষভাবে সহযোগিতা করবে।
টেন মিনিট স্কুলের “কমিউনিকেশন মাস্টারক্লাস কোর্স”
অনেকেই ভাবে যে অনর্গল কথা বলতে পারলেই তারা কমিউনিকেশন এক্সপার্ট। অথচ কখন, কোথায়, কিভাবে কথা বলতে হয় বা যোগাযোগ রাখতে হয় সে সম্পর্কে তাদের যথেষ্ট ধারণা থাকেনা। তাইতো অনলাইনে-অফলাইনে অযথা কথা, অযৌক্তিক লেখার ছড়াছড়ি দেখা যায়। তাই টেন মিনিট স্কুল হাজির হয়েছে এক ভিন্নধর্মী ও অতি প্রাসঙ্গিক কোর্স নিয়ে। যেখানে আপনি শিখতে পারবেন
- স্মার্টলি কমিউনিকেট করার প্রয়োজনীয় স্কিলস
- ব্যক্তিগত এবং সামাজিক জীবনে প্রয়োজনীয় যোগাযোগ কৌশল
- ফোন কল এবং অনলাইন মিটিং এর মাধ্যমে প্রফেশনাল কমিউনিকেশন
- চাকরির ইন্টারভিউতে কমিউনিকেট করার কৌশল
- কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীদের সাথে কমিউনিকেট করার সঠিক পদ্বতি
- সোশ্যাল মিডিয়াতে সঠিকভাবে যোগাযোগ করার পদ্ধতি
- হাই-প্রোফাইল মানুষদের সাথে নেটওয়ার্কিং এর কৌশল
- পাবলিক স্পিকিং এর জন্য কার্যকরী টিপস এন্ড ট্রিকস
বাস্তব জীবনের বিভিন্ন পরিস্থিতিতে রিটেন, ভার্বাল ও নন ভার্বাল কমিউনিকেশন আরো ইফেক্টিভ করার দারুণ সব কৌশল শিখুন তাহসান খানের কোর্সে!
কোর্স লিংকঃ Communication Masterclass by Tahsan Khan
দক্ষতা বৃদ্ধিতে বই
যোগাযোগ দক্ষতা বাড়াতে কি পড়াশোনাও করতে হবে? উত্তরটা নির্দ্বিধায় ‘হ্যাঁ’’। এটি সামাজিক দক্ষতা হলেও যোগাযোগ ক্ষমতার সঠিক প্রয়োগের জন্য অবশ্যই পড়তে হবে, জানতে হবে ছোট-বড় সব টিপস এন্ড ট্রিকস। কমিউনিকেশন স্কিলের গুরুত্ব যেমন বেশি তেমনি এ সম্পর্কিত বইয়ের চাহিদাও তুঙ্গে।
এবার এমনই একটি বই সম্পর্কে একটু ধারণা নেয়া যাক-
“Exactly What to Say: The Magic Words for Influence and Impact” by Phil M. Jones
যোগাযোগ দক্ষতা বৃদ্ধিতে ফিল এম জোনসের “এক্স্যাক্টলি হোয়াট টু সে: দ্য ম্যাজিক ওয়ার্ডস ফর ইনফ্লুয়েন্স এন্ড ইমপ্যাক্ট” বইটি বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। বইটিতে খুব সাধারণ কিছু ব্যাপারে অসাধারণ তথ্য দেয়া হয়েছে, যা আমাদের ভাবনার বাইরে থাকে কিংবা আমরা তা এড়িয়ে চলি। শব্দের সুষ্ঠ ব্যবহার কিভাবে অন্যের মানসিকতার ইতিবাচক পরিবর্তন করতে পারে তেমনই বেশ কিছু উদাহরণ দেখে রীতিমতো অবাক হবেন। অন্যকে প্রভাবিত করে ব্যক্তিগত বা পেশাগত জীবনে নিজের কাজ হাসিল করে নেয়ার অনবদ্য পদ্ধতির সারসংক্ষেপ পেয়ে যাবেন এই বইটিতে। এছাড়াও নেতৃত্বের গুনাবলী অর্জনের ক্ষেত্রে বইটি বেশ সহায়ক হবে।
বইটি কিনতে নিচের লিংকে প্রবেশ করুন:
https://www.rokomari.com/book/192903/exactly-what-to-say-the-magic-words-for-influence-and-impact
কমিউনিকেশন হ্যাকস বাই আয়মান সাদিক
কমিউনিকেশন হ্যাকস বইটি জীবনে উন্নতি করার জন্য যেসকল কমিউনিকেশন স্কিলস লাগবে তা আপনাকে দেখিয়ে দিবে । এই বইটি আপনাকে সবগুলো স্কিল শিখাবে যা আপনাকে আপনার চিন্তাধারা স্পষ্ট এবং সহজে প্রকাশ করতে সাহায্য করবে। কম প্রচেষ্টায় যোগাযোগ করতে পারার দক্ষতা আপনাকে আরো অসাধারণ ফলাফল অর্জনে সাহায্য করবে এবং একইসাথে বিভ্রান্তি ও ভুল বোঝাবুঝি হ্রাস করবে।
১২৯ পৃষ্ঠার বইটি কিনতে হলে দেখুন এখানে বা নিচের ছবিতে ক্লিক করুন।
শেষকথা
উল্লেখিত প্রতিটি টিপস আয়ত্ব এনে সঠিক প্রয়োগ করতে পারলে আপনি নিঃসন্দেহে একজন “কমিউনিকেশন এক্সপার্ট” হয়ে উঠবেন। আর এজন্য আপনাকে অবশ্যই নিয়মিত চর্চা ও নতুনত্বের সাথে মানিয়ে নেয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। তাই দেরী না করে আজকে থেকেই এই জাদুকরী দক্ষতা অর্জনে লেগে থাকুন।
Author
সানজিদা জাহিন প্রিমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা সিলেটে। ছোটবেলা থেকেই নিয়মিত দৈনিক পত্রিকা পড়তেন, ম্যাগাজিনেও বুঁদ হয়ে থাকতেন। ক্রমেই হয়ে উঠেন বইপ্রেমী। পড়াশোনার বাইরে সহশিক্ষামূলক কাজে সবসময়ই ছিলো সরব উপস্থিতি। লেখালেখির শুরু হয় হাইস্কুল জীবনেই। তার লেখা ম্যাগাজিন, পত্রিকাসহ বিভিন্ন যোগাযোগ-মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। স্নাতক (অনার্স) পর্যায়ে রসায়নের ছাত্রী হলেও সাহিত্যের প্রতি রয়েছে প্রিমার বিশেষ আগ্রহ। করোনাকালীন সময়ে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য শিখেছেন ডিজিটাল মার্কেটিং, শুরু করেন প্রফেশনাল কন্টেন্ট রাইটিং। লেখালেখিকে ভালোবাসা মেয়েটির সাহিত্য নিয়ে বড় স্বপ্ন থাকলেও সবার জন্য লিখতে বেশ স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। তাই তিনি বিডি আইসিটি ক্লাবের দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ে লিখে যাচ্ছেন।
মুরাদ খান (Murad Khan) এর ছোটবেলা থেকেই প্রযুক্তির প্রতি আলাদা আগ্রহ আছে। প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে মানুষের জীবনে ভালো পরিবর্তন আনার জন্য কাজ করতে ভালোবাসেন। । কর্মজীবন শুরু করেন ফ্রিল্যান্সিং দিয়ে, পরে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে যোগ দেন। নিজের চেষ্টায় অর্জন করেছেন ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিভিন্ন দক্ষতা। কাজ করছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ প্রযুক্তি নিয়ে আগ্রহী মানুষের জীবন মান উন্নয়নে। এই লক্ষ্যেই বিডি আইসিটি ক্লাবের প্রতিষ্ঠা।