সিনচাই সুজুকি এর মতে, জ্ঞানকে দক্ষতা বলা যাবেনা, বরং জ্ঞানকে দশ হাজার বার গুণ করলে দক্ষতা হয়। অনেক কিছু জানা সত্ত্বেও আপনি খুব বেশি দূর এগুতো পারবেন না, যদি আপনার দক্ষতা না থাকে।
কারণ কি জানতে পড়তে থাকুন। সাথে জানবেন আপনার না জানা অনেক দক্ষতার কথা, পাবেন দক্ষতা অর্জন বিষয়ক বিভিন্ন বাছাইকৃত সেরা কোর্স এবং বইয়ের লিংক।
দক্ষতা কি
উইকিপিডিয়ায় বলা হয়েছে-
”A skill is the ability to perform an action with determined results often within a given amount of time, energy, or both.”
অর্থাৎ দক্ষতা হলো সময়, শক্তি বা উভয়ই ব্যবহার করে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্ধারিত ফলাফলসহ কাজ সম্পাদন করার সক্ষমতা।
Merriam-Webster ডিকশোনারিতে দক্ষতার সংজ্ঞায় বলা হয়েছে-
”the ability to use one’s knowledge effectively and readily in execution or performance.”
অর্থাৎ কারো জ্ঞান কার্যকরভাবে ব্যবহার এবং সহজে কার্যসম্পাদন করার ক্ষমতা।
সহজ করে বলতে গেলে, দক্ষতা হলো আপনার সেই গুন যার মাধ্যমে আপনি কোনো কাজ কম সময়ে ও কম শ্রমে সবচেয়ে ভালোভাবে করতে পারেন।
দক্ষতা কেন প্রয়োজন
জীবনে যে সকল কারণে দক্ষতা প্রয়োজন তা হলো –
১. পেশাগত জীবনে ঈর্ষণীয় উন্নতি
২. শান্তিপূর্ণ পারিবারিক জীবন
৩. উদ্যোক্তা হিসেবে খ্যাতি বৃদ্ধি
৪. সমস্যার সহজ সমাধান
৫. পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নেয়া
৬. নতুন কাজের জগতে নিজের অবস্থান তৈরি
৭. আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য
৮. অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা পাওয়ার জন্য
৯. উন্নত সামাজিক অবস্থান
১০. সমাজ সংস্কারে ভূমিকা
মোটামোটি জীবনের সকল ক্ষেত্রে সফল হতে দক্ষতার বিকল্প নেই।
প্রয়োজনীয় দক্ষতা ও তা অর্জনের উপায়
এখানে ১০টি জীবন দক্ষতা ও তা অর্জনের উপায় আলোচনা করা হলো যা আপনার জীবনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। আপনার যদি কখনো মনে হয় যে একজন মানুষের কি কি দক্ষতা থাকা প্রয়োজন বা কিভাবে দক্ষতা অর্জন করা যায়, সেটার উত্তর এখানে পেয়ে যাবেন –
১. ভালো শিক্ষার্থী হওয়ার জন্য দক্ষতা
আমাদের জীবনের শুরুর দিকে একটাই লক্ষ্য থাকে, তা হলো – ভালো শিক্ষার্থী হওয়া। আমরা অনেকেই একটা পর্যায়ে হাল ছেড়ে দেই, কারণ ভেবেই নেই যে আমার দ্বারা আর ভালো রেজাল্ট করা হবেনা !
এদিকে ভালো করে শিখতে পড়তে না পারলে আবার ভালো ক্যারিয়ার গোড়া মুশকিল হবে। আর তাই এখানে ভালো শিক্ষার্থী হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতাগুলো তুলে ধরা হলো –
- সিলেবাস নিয়ে সঠিক পরিকল্পনা করা
- সময়ের সদ্ব্যবহার করা
- কার্যকরী উপায়ে লেখাপড়া করা
- প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার করা যাতে লেখাপড়া সহজ হয়
- লেকচার শুনে শর্টনোট দেয়ার দক্ষতা
- কোন বিষয়ে গবেষণাসমৃদ্ধ নোট বানাতে পারা
- সুন্দর উপাস্থপনা করতে পারা
ভালো শিক্ষার্থী হওয়ার দক্ষতা অর্জন করার উপায়:
- নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবা
- বড় কাজকে ছোট কাজে ভাগ করা
- সময়কে প্রাধান্য দেয়া
- প্রযুক্তির জগতে ভ্রমণ করা (বিভিন্ন এপস নিয়ে নিরীক্ষা করা)
- বিভিন্ন কর্মজীবী মানুষের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা
লেখাপড়া সহজ করার জন্য সকল টিপস পেয়ে যাবেন এই গুরুত্বপূর্ণ কোর্সে – Study Smart Course by Seeam Shahid
ভালো শিক্ষার্থী হওয়ার উপায় নিয়ে চমৎকার বিভিন্ন বই পাবেন রকমারিতে।
২. ব্যক্তিজীবনের জন্য দক্ষতা
ব্যক্তিজীবনে আপনার সুখ ও মানসিক শান্তির উপর কিন্তু নির্ভর করছে বাকি সব কিছু। আর এই ব্যক্তি জীবনে সুখী হওয়ার জন্য যে মানসিক দক্ষতা আপনার জানা প্রয়োজন, তা হলো –
- নিজের সম্পর্কে পুরোপুরি জানা
- লক্ষ্য নির্ধারণ করতে পারা
- সঠিক বন্ধু বা সঙ্গী নির্বাচন করা
- আবেগের নিয়ন্ত্রিত ব্যবহার করা
- প্রতিদিন জীবন নিয়ে কৃতজ্ঞতার চর্চা করা
ব্যক্তিজীবনে দক্ষতা অর্জন করার উপায়:
- নিজের সাথে অর্থপূর্ণ সময় কাটানো। সময় নিয়ে ভাবুন এসব বিষয়-
- নিজের শখ গুলো
- কোন কাজ করলে মনে আনন্দ মেলে
- কোন কাজ করতে ভয় লাগে
- কী হতে ইচ্ছা করে ভবিষ্যতে
- যোগাযোগ দক্ষতা অর্জন করা
- সঠিক উচ্চারণে কথা বলা বা ভাষা দক্ষতা প্রয়োগ করা
- কথা বলার সময় সম্মানসূচক শব্দ ব্যবহার করা
- মার্জিত ও পরিচ্ছন্ন পোষাক পরিধান করা
- অন্যের কথা বলার সময় মনোযোগ দিয়ে শোনা
- বক্তব্য উপস্থাপনে বেশি সময় না নেয়া
- নেটওয়ার্কিং করা
- পরিমিতিবোধ অর্জন করা
- সুস্থ থাকার ক্রমাগত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া
মানসিকভাবে প্রশান্তিতে থাকার জন্য করুন মেডিটেশন। ব্যক্তিজীবনে সফল হওয়ার জন্য বাছাইকৃত সব বই পাবেন এখানে।
৩. পারিবারিক জীবনের জন্য দক্ষতা
পরিবার হচ্ছে একজন মানুষের চূড়ান্ত আশ্রয়। যে-সব কারণে পারিবারিক জীবনে দক্ষতা প্রয়োজন, তা হলো –
- ছোট বড় সবার পছন্দ ও অপছন্দ বুঝতে
- সব সদস্যদের ব্যক্তিত্বের বৈচিত্র্য মানতে
- সবাইকে সমান সুযোগ দিতে
- নিয়ম শৃঙ্খলার অভ্যাস জোরদার করতে
- একে অপরের পরিপূরক হতে
পারিবারিক জীবনে দক্ষতা অর্জনের উপায়:
পরিবারকে বলা হয় যেকোনো মানুষের জন্য প্রথম প্রতিষ্ঠান। আর যেকোনো প্রতিষ্ঠানের প্রথম বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে কিছু নিয়ম কানুন। কিছু বিষয় যেমন –
- আচার ব্যবহারে নম্রতা
- নিজের কাজ নিজে করা
- শরীর চর্চা
- প্রার্থনা
- উপার্জনক্ষম হওয়া
পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে যোগাযোগের মাধ্যমে সফল হতে এই কোর্সটি আপনার জন্য উপকারী হবে – Communication Masterclass by Tahsan Khan.
পারিবারিক জীবনে দক্ষ হতে এই বইটি পড়ে দেখতে পারেন – ফ্যামিলি লাইফ by হায়াত মাহমুদ
৪. পেশাগত দক্ষতা – হার্ড স্কিলস বনাম সফট স্কিলস
যেকোনো পেশায় সফল হওয়ার জন্য যে দক্ষতা ও যোগ্যতা প্রয়োজন সেটাকেই পেশাগত দক্ষতা বলে।
যেকোনো স্কিল বা যোগ্যতার প্রয়োজন সবসময়ই ছিল কাজের ক্ষেত্রে সফল হতে, কিন্তু এই বর্তমান সময়ে হার্ড স্কিল ও সফট স্কিল নিয়ে আলোচনা যেন সব কিছুর ঊর্ধ্বে!
পেশাগত জীবনে একটা নির্দিষ্ট কাজের পোস্ট সম্পর্কিত দক্ষতাকে বলা হয় হার্ড স্কিলস আর একজন মানুষের ব্যক্তিগত যোগ্যতা ও মানুষ হিসেবে গুণাবলিকে বলা হয় সফট স্কিলস।
কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ে বা হিসাবরক্ষণে পারদর্শী হওয়াটা হার্ড স্কিলের পর্যায়ে পরে আর শ্রদ্ধা ও সম্মানবোধ বা নীতিবোধ হচ্ছে সফট স্কিলের উদহারণ।
হার্ড ও সফট স্কিলের মাঝে কোনটা বেশি প্রয়োজন এ নিয়ে বিতর্ক থাকলেও সোজা কথা হচ্ছে – দুই ধরনের দক্ষতাই প্রয়োজন। একজন সফল কর্মজীবী মানুষ হতে গেলে সব ধরনের স্কিলই প্রয়োজন।
নিজের ভেতরের দক্ষতা খুঁজে পেতে ও কাজে লাগাতে এই কোর্সটি আপনার জন্য উপকারী হবে –
বর্তমান সময়ে যোগাযোগ দক্ষতা ও সফট স্কিল নিয়ে এই বইটি ভীষণভাবে উপকারী হবে আপনার জন্য – ক্যারিয়ার ও ব্যক্তিজীবনে জয়ী হতে সফট স্কিলস
৫. চাকরিজীবনে প্রয়োজনীয় দক্ষতা
চাকরিজীবনে বিশেষ কিছু পেশাগত দক্ষতা প্রয়োজন টিকে থাকা ও সফল কর্মজীবী হিসেবে পরিচিত হওয়ার জন্য। সেই দক্ষতাগুলো হলো –
- সঠিক চাকরিতে আবেদন করা
- কাজের ইন্সট্রাকশন বোঝা
- নিজের কাজের ও প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য বোঝা
- বিভিন্ন স্বভাবের মানুষের সাথে মিশতে পারা
- সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা
- হালনাগাদ করা নিজেকে
এই দক্ষতাগুলো যেভাবে অর্জন করবেন:
- নিজের মেধা ও ইচ্ছা বুঝে চাকরিতে আবেদন করা
- সিনিয়রদের কাজের ধরণ বোঝার চেষ্টা করা
- মানুষের ভালো দিকগুলো নিজের মাঝে ধারণ করা
- কাজের শুরু থেকেই মনোযোগী থাকা
- নতুন কাজের পদ্ধতি সম্পর্কে জ্ঞান রাখা
ক্যারিয়ার দক্ষতা বা, চাকরি জীবনে সফল হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সব টিপস নিয়ে বাস্তব অভিজ্ঞতা দিয়ে সাজানো একটি কোর্স লিংক আপনার জন্য শেয়ার করা হলো
Complete-career-planning-for-beginners
৬. উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা
উদ্যোক্তা হওয়া যেন এখন সময়ের দাবি। সময়ের সাথে চলতে গিয়ে আমরা বুঝতে শিখেছি, যে নিজের সৃষ্টিশীল চিন্তা দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে মানুষের প্রয়োজন মিটিয়ে অর্থ উপার্জন কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
একজন ব্যবসায় উদ্যোক্তা সমাজে –
● মানুষের অভাব পূরণ করে
● নতুন পণ্য বা সেবা তৈরী করে
● সৃষ্টিশীল চিন্তার বিকাশ ঘটায়
● ব্যবসায়িক সকল কার্যক্রম নিজে পরিচালনা করে
● কর্মসংস্থান তৈরি করে
আর একজন ব্যবসায় উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য যে-সব দক্ষতার প্রয়োজন হয় তা হলো –
● সমাধান কেন্দ্রিক চিন্তাভাবনা থাকা
● নতুন ও আকর্ষণীয় কোনো পণ্যের ধারণা তৈরী করা
● অর্থের উৎস ও সদ্ব্যবহার করা
● সঠিক ক্রেতাগোষ্ঠী খুঁজে বের করা
● আন্তরিক সম্পর্ক তৈরি করা
এই দক্ষতাগুলো অর্জনের উপায়:
● যেকোনো সমস্যায় দ্রুত ও সহজ সমাধান বের করার চেষ্টা ও অভ্যাস করা
● ভিন্নতা ও অভিনব প্রোডাক্টের সম্ভাব্যতা যাচাই করা
● নিজেই অর্থের জোগান দেয়া আর সঠিক ব্যবহার করা
● ক্রেতার প্রয়োজন ও ক্রয়ক্ষমতা নির্ধারণ করা
● ক্রেতার ভালো লাগা ও চাহিদা বোঝা ও খোঁজ খবর নেয়া
ঘরে থেকে উদ্যোক্তা হওয়ার সহজ সব টিপস নিয়ে একটি বিনামূল্যের কোর্স লিংক আপনার দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য শেয়ার করা হলো –
উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য এই বইটি আপনাকে সাহায্য করবে –নিজের বলার মত একটা গল্প
৭. পোস্ট-প্যানডেমিক পৃথিবীতে দক্ষতা
বর্তমানে এই পোস্ট-প্যানডেমিক পৃথিবী আর আগের মতো নেই। কাজের ধরণ ও কাজের সময় সবই পরিবর্তিত এখন। সুযোগ যেমন আছে তেমনি আছে চ্যালেঞ্জ। এই সময়ে যে দক্ষতাগুলো দরকার তা হলো –
- খাপ খাইয়ে নেয়া,
- একের বেশি বিষয়ে দখল রাখা,
- চলমান পরিবর্তন নিয়ে ভাবা,
- দুর্বলতাগুলো একে একে কাটিয়ে ওঠা,
- কমফোর্ট জোন ভুলে যাওয়া, ইত্যাদি।
করোনা ভাইরাসের প্রকোপের পর এখন বিশ্ব বুঝে গেছে কোনো কিছুরই নিশ্চয়তা নেই। আর এই অনিশ্চিত জীবনে বেঁচে থাকতে গেলে নতুন করে ভাবতে হবে।
পোস্ট-প্যানডেমিক পৃথিবীতে দক্ষতা অর্জনের জন্য প্রথমেই আমাদের চিন্তায় নতুনত্ব আনতে হবে। ইন্টারনেটে প্রতিদিন খোঁজ করতে হবে কোন ধরনের কাজের সুযোগ বাড়ছে আর কোনটার কমছে। অর্জিত যোগ্যতা দিয়ে আর কত কী করা সম্ভব, সেটা খুঁজে বের করতে হবে।
কোর্স:
Facebook Marketing Expert Bundle
৮. নেতৃত্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা
নেতৃত্ব অসাধারণ একটি গুন যা আপনাকে কাজের ক্ষেত্রে ও ঘরে সবার থেকে আলাদা করবে। ভবিষ্যতে কিছু একটা অর্জনের জন্য যখন আপনি সবাইকে আজ উৎসাহিত ও প্রস্তুত করতে পারবেন, সেটাই হচ্ছে নেতৃত্ব।
এই জন্য যেই দক্ষতা গুলো প্রয়োজন তা হলো – পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা, সুবিবেচক হয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া, কারো কথায় ভীষণভাবে প্রভাবিত না হওয়া, সঠিক মানুষ খুঁজে বের করা যার রয়েছে কাজের প্রতি ভক্তি, সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার মানসিকতা।
নেতৃত্বের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জনের উপায় হলো – সাথে মানুষের যোগ্যতা ও ইচ্ছাশক্তিকে জাগানো। সিনিয়র ও জুনিয়র সবার সাথে মেশা ও কাজ করা। দীর্ঘমেয়াদি চিন্তা করা ও সুন্দর ভবিষ্যৎ তৈরির জন্য পরিশ্রম করা।
দক্ষ নেতৃত্বের গুণাবলি অর্জনের জন্য এই কোর্সটি উল্লেখযোগ্য – Smart Leadership
নেতৃত্বের দক্ষতা বাড়াতে পড়তে পারেন এই বইগুলো –
৯. উন্নত জীবনের জন্য দক্ষতা
আমাদের বেঁচে থাকা কিন্তু শুধু নিজেদের জন্য নয়। নিজের জন্য বাঁচাতে কোনো মহত্ত্ব নেই। এই অগণিত মানুষের মাঝে নিজের নাম ও পরিচয় অমর করার একটাই উপায় – উন্নত ও মহৎ জীবন যাপন করা। এটা একদমই কঠিন কিছু না। তবে খুব কম মানুষই এই উন্নত ও মহৎ জীবন যাপন করতে পারে।
উন্নত জীবনের জন্য যে দক্ষতা প্রয়োজন তা হলো – নিজেকে কোনো এক দিকে বিশেষভাবে যোগ্য বানানো, চারপাশে অবহেলিত মানুষের দিকে নজর রাখা, অভাবী মানুষের জীবনে কাজে লাগে, সমাজে আরো মানুষকে উজ্জীবিত করে এমন কিছু করা।
উন্নত ও মহৎ জীবন মানেই আমরা বুঝতে পারছি যে এমন জীবন যা অন্যের কাজে লাগে জীবন সহজ করতে। আর এই জন্যে দক্ষতা অর্জনের জন্য যা করণীয় তা হলো –
● ছোট থেকেই স্কুলের বাইরে বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক বই পড়া
● বেঁচে থাকা মানেই শুধু নিজের প্রয়োজন মিটানো, এই ধারণা থেকে বের হওয়া
● স্বেচ্ছাসেবী মনোভাব তৈরি করা
● পরিচিত উদার ও স্বেচ্ছাসেবীদের অনুসরণ করা
● পরবর্তী প্রজন্মের কথা চিন্তা করা
অর্থপূর্ণ ও উন্নত জীবন যাপনের জন্য এই কোর্সটি বিশ্বের অনেক মানুষের কাছে সমাদৃত – https://www.udemy.com/course/the-art-of-living-in-the-moment/
খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বই আছে এই বিষয়ে যা প্রতিটি মানুষেরই পড়া প্রয়োজন, তা হলো – https://www.rokomari.com/book/8128/unnoto-jibon
১০. প্যারেন্টিং এর জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা
প্যারেন্টিং এমন একটি বিষয় যার ভালো মন্দের উপর একটি পরিবার, সেখান থেকে একটি সমাজ ও সম্মিলিতভাবে একটি জাতির ভালো বা মন্দ হওয়া নির্ভর করে। বাবা মা যেভাবে তাদের সন্তান লালন করবেন, সেরকম হয়েই বেড়ে উঠবে। যেমন দক্ষ পারেন্টদের সন্তান সুস্থ ও উদার মানসিকতা নিয়ে বড় হয়। সেই সন্তানরা আত্মনির্ভরশীলতার শিক্ষা পায় ছোট থেকেই।
প্যারেন্টিং বা সন্তান লালনে দক্ষতা অর্জনের উপায় –
● সন্তানের জন্য উপযোগী পরিবেশ নিশ্চিত করা।
● বাবা মা দুজনেরই নিয়ম করে সন্তানকে সময় দেয়া
● সন্তানের বেড়ে ওঠার দিনগুলোতে নিজেদের কথা ও শব্দ চয়নে সাবধান থাকা
● সন্তানকে খাবার, অর্থ ও সুস্বাস্থ্যের গুরুত্ব বোঝানো
● সাহায্যকারীদের প্রতি সম্মান দেখানো
প্যারেন্টিং নিয়ে অনলাইনে গোছানো কোর্স হলো –
প্যারেন্টিং নিয়ে এই বইটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেছে – প্যারেন্টিং
দক্ষতা অর্জনের সঠিক সময়:
দৈনন্দিন জীবন থেকে সামাজিক ও পেশাগত জীবনে দক্ষতা অর্জনের যেহেতু কোনো বিকল্প নেই, সুতরাং দক্ষতা অর্জন যত আগে থেকে শুরু করা যায় ততই ভালো।
যখন একজন মানুষ দায়িত্ববান হতে শুরু করে, নিজের জীবনের লক্ষ্য স্থির করে ফেলে, তখনি তার উচিত প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জনের জন্য কাজ করা।
দক্ষতা অর্জনে যা বিবেচনা করবেন:
জীবন দক্ষতা অর্জনের উপায় বুঝতে পারাও কিন্তু একটা দক্ষতা! তবে হ্যাঁ, জীবনে দক্ষতা অর্জনের ও দক্ষতা বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলেও সেটি অর্জনে কিছু ব্যাপার খেয়াল করা জরুরি, যেমন –
- একজনকেই সকল বিষয়ে দক্ষ হতে হবে, ব্যাপারটি এমন না।
- আপনার আগ্রহ ও পেশা অনুযায়ী দক্ষতা অর্জন করবেন।
- দক্ষতা অর্জন এককালীন কোনো বিষয় না, আর তাই মাঝে মাঝে খোঁজ রাখতে হয় জ্ঞান বা দক্ষতা হালনাগাদ করার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে।
- দক্ষ হবেন আপনি আপনার প্রয়োজনে, তাই গর্ব করার কোনো বিষয় নেই এখানে। কারণ জ্ঞানের শেষ নেই, একই ভাবে দক্ষতারও।
জীবন যেকোনো সময় বদলে যেতে পারে আর তাই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নতুন বিষয়ে দক্ষতা বা যোগ্যতার প্রয়োজন হয়, সেটা স্বাভাবিক ভাবেই নিতে হবে।
সমাপনী বক্তব্য:
আমাদের সংক্ষিপ্ত এই যাপিত জীবনের একটাই উদ্দেশ্য – তা হলো সুখী হওয়া। কিন্তু এই সুখের সন্ধানে সবাই ছুটলেও সুখী হতে পারি কেউ কেউ। এর একটা কারণ হচ্ছে পরিকল্পনা মাফিক প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন না করে আগানো। এই আর্টিকেলে ১০টি জীবন দক্ষতা নিয়ে খুব সহজ করে বলা হয়েছে যেন আমরা বুঝতে পারি একজন মানুষের কি কি দক্ষতা থাকা প্রয়োজন।
আপনার মনে যদি দক্ষতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন আসে দক্ষতা নিয়ে, অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন। আপনার সুন্দর ও সফল জীবনের প্রত্যাশা করছি।
Author
A Teacher by Profession.
Writer by Hobby.
Change-Catalyst at Heart for a #Bangladesh full-on Love, Support, Compassion & Ethics for Each Other.
মুরাদ খান (Murad Khan) এর ছোটবেলা থেকেই প্রযুক্তির প্রতি আলাদা আগ্রহ আছে। প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে মানুষের জীবনে ভালো পরিবর্তন আনার জন্য কাজ করতে ভালোবাসেন। । কর্মজীবন শুরু করেন ফ্রিল্যান্সিং দিয়ে, পরে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে যোগ দেন। নিজের চেষ্টায় অর্জন করেছেন ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিভিন্ন দক্ষতা। কাজ করছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ প্রযুক্তি নিয়ে আগ্রহী মানুষের জীবন মান উন্নয়নে। এই লক্ষ্যেই বিডি আইসিটি ক্লাবের প্রতিষ্ঠা।